আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা শহরের পশ্চিমে শরণার্থী শিবিরে চালানো হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ের তিন ছেলে এবং অন্তত তিনজন নাতি-নাতনি নিহত হয়েছেন। হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান হানিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসির।
কাতারে অবস্থানরত হানিয়ে আল-জাজিরাকে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে জানান, যুদ্ধের মধ্যে তার ছেলেরা গাজায় অবস্থান করছিলেন। হানিয়ের তিন ছেলে হলেন- হাজেম, আমির ও মুহাম্মদ ইসমাইল হানিয়ে।
গাজাভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে থাকা কয়েকটি মৃতদেহ ঢেকে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলের হামলায় হানিয়ের আরেক ছেলে নিহত হয়েছিলেন। গত অক্টোবরে প্রাণ হারান তার ভাই ও ভাতিজা। পরে নভেম্বরে তার এক নাতি নিহত হন।
ইসমাইল হানিয়ে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানের পদে আছেন। তাকেই এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মনে করা হয়। গত শতকের আশির দশকে হামাসের উত্থানকালে ফিলিস্তিনি সুন্নি মুসলিমদের এই রাজনৈতিক ও সামরিক আন্দোলনের সামনের কাতারে ছিলেন ইসমাইল হানিয়ে। ১৯৮৯ সালে তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ইসরায়েল। এরপর ১৯৯২ সালে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে হানিয়েকে ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এক বছর নির্বাসনে থাকার পর ইসমাইল হানিয়ে গাজায় ফেরেন। ১৯৯৭ সালে হামাসের মতাদর্শিক গুরুর কার্যালয়ের প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। এতে হামাসে তার পদমর্যাদা বাড়ে।
ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে হামাস বেশির ভাগ আসনে জয় পাওয়ার পর ২০০৬ সালে ইসমাইল হানিয়েকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কিন্তু সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজায় মাহমুদ আব্বাসের দল ফাত্তাহর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হানিয়েকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে হানিয়ে ওই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, তার সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি তাদের জাতীয় দায়িত্ব থেকে সরবে না এবং তিনি গাজা শাসন করতে থাকেন।
পরে ২০১৭ সালে ইসমাইল হানিয়ে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন। পরের বছর ইসমাইল হানিয়েকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। কয়েক বছর ধরে ইসমাইল হানিয়ে কাতারে বসবাস করছেন।
এমআই