মোঃ ইমরান মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি :
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে একটি নিরিহ পরিবারের স্বজনদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একই পরিবারের অন্তত সাতজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা জামালপুর ও ময়মনসিংহের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।
গত শনিবার মেলান্দহ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বারইপাড়া গ্রামে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় নেতৃত্বদানকারী স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বর ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবরকে প্রধান আসামিসহ ১৭ জনকে আসামি করে মেলান্দহ থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী মোকছেদ আলীর মেয়ে মৌসমী আক্তার।
অভিযোগে জানা গেছে, মেলান্দহ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বারইপাড়া গ্রামের অটোরিকশাচালক মোকছেদ আলী ও তার স্বজনদের সাথে প্রতিপক্ষ সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর ও তার স্বজনদের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দীর্ঘ দিনের বিরোধ রয়েছে। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে মোকছেদ আলীর ছেলে অটোরিকশাচালক রবিন মিয়া তাদের বাড়ির সামনে রাস্তায় অটোরিকশা রেখে অন্য অটোরিকশাচালকের সাথে কথা বলছিলেন। এ সময় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রভাবশালী আলী আকবর রাস্তায় অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখার অজুহাত তুলে রবিন মিয়াকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আলী আকবর সেখান থেকে চলে যান। এর ঠিক ১০ মিনিট পর আলী আকবরের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র লোক মোকছেদ আলী ও তার মেয়ে মৌসমী আক্তারের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে টিনের বেড়া ও ঘরে থাকা যাবতীয় আসবাবপত্র ভাংচুর ও অন্যান্য মালামাল তছনছ করে অন্ততপক্ষে এক লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
এ সময় প্রভাবশালী আলী আকবরের নেতৃত্বে অন্তত ২০/২৫ জনের একদল লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোকছেদ আলী ও তার পরিবারের স্বজনদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। সন্ত্রাসী হামলায় মোকছেদ আলী, তার স্ত্রী রুবি বেগম, ছেলে রবিউল ইসলাম, রবিন মিয়া, মোকছেদ আলীর ভাই মোজাম্মেল শেখ, মোকছেদ আলীর মেয়ে মৌসমী আক্তারের স্বামী ছানোয়ার ইসলাম এবং মোকছেদ আলীর ভাতিজা বিল্লাল শেখ গুরুতর আহত হন। ঘটনার রাতেই তাদের সবাইকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে রবিউল ইসলাম ও ছানোয়ার হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। গুরুতর আহতরা সবাই দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোকছেদ আলীর মেয়ে মৌসমী আক্তার বাদী হয়ে গতকাল রবিবার সকালে মেলান্দহ থানায় মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ওই অভিযোগে হামলার নেতৃত্বদানকারী বারইপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী আলী আকবরকে প্রধান বিবাদী করা হয়েছে। এতে অন্যান্য বিবাদীরা হলেন একই গ্রামের সুজন মিয়া, রফিকুল ইসলাম, মো. শফিক, মো. কাইকুবাদ, মো. রিফাত, বক্কর, আরিফ মিয়া ও সেনাসদস্য আতিক, আল আমিন, রিমন, মো. শাখাওয়াত, হেলাল উদ্দিন, মিহাদ, মাসুদ, সৌরভ ও মোছা. আখি।
এবিষয়ে অভিযুক্তদের বাড়িতে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
মেলান্দহ থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহাম্মদ বলেন, মেলান্দহ পৌরসভার বারইপাড়া গ্রামের মোকছেদ আলীর বাড়িতে হামলা ও তার স্বজনদের মারধরের ঘটনায় তার মেয়ে মৌসমী আক্তার থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তার অভিযোগ তদন্ত করে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর