জেলা প্রতিনিধি:
তাঁতানো রোদে দমবন্ধ অবস্থা এখন যশোরের প্রকৃতিতে। শনিবার (২০ এপ্রিল) যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে ঘোষণা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কড়া রোদ ও আবহাওয়ার কারণে বয়স্ক মানুষ নানা ধরনের অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর ও হিটস্ট্রোকে।
প্রচণ্ড গরমে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীদের চাপ বেড়েছে সাংঘাতিকভাবে। এ অবস্থায় শিশুদের নিয়ে বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
যশোরের সীমান্তবর্তী বেনাপোল বন্দর ও শার্শায় গরমে জনজীবন হাঁপিয়ে উঠেছে। একই দশা প্রাণীকূলেও। তীব্র গরমের মধ্যে দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে গিয়ে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা সবার। বিশেষ করে এখনও যারা বোরো ধান ঝাড়া ও রোদে শুকানোর কাজ করছেন গরমে যেন প্রাণ যায় যায় অবস্থা।
এদিকে গরমের দাপট চরমে ওঠায় মৌসুমী ফলের দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় লেগে আছে। গরম থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে লেবুর শরবত, আখের রস, ডাব, কচি তালের শাঁস খেতে দেখা যায় পথচলতি মানুষকে। এছাড়া তরমুজ, বাঙ্গির মতো রসালো ফলও বেশ বিক্রি হচ্ছে এখন। রোদের তেজ থেকে রক্ষা পেতে বহু মানুষকে মাথার ওপর ছাতা ধরে চলাচল করতে দেখা গেছে। চৈত্র শুরুর পর থেকে যশোরে গরমের এমন দাপট চলছে।
অপরদিকে তীব্র তাপদাহের মধ্যে যশোরাঞ্চলে পানি সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। অনেক জায়গায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। তার উপর বিদ্যুতের লোডশেডিং জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই দুঃসহ অবস্থা গ্রামাঞ্চলে বেশি।
বিএডিসির সেচ বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য, যশোরাঞ্চলে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। এরইমধ্যে ২০ থেকে ৩০ ফুট নেমে গেছে। যে কারণে অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি মিলছে না।
কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত টিউবওয়েলগুলোতে পানি পাওয়া যাবে না।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুস সালাম জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বেশিরভাগ শিশু ঠান্ডা-জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ভাইরাল ফিভার’ বা মৌসুমী জ্বর থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়াবেন। রোদে ঘোরাঘুরি করতে দেওয়া যাবে না। খোলামেলা ঠান্ডা পরিবেশে শিশুদের রাখা ও বেশি বেশি পান করাতে হবে। গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগীও বেড়েছে। সচেতনতার বিকল্প কিছু নেই।
তিনি আরও জানান, গরমে বাড়ছে অস্বস্তি। কড়া রোদ ও আবহাওয়ার কারণে বয়স্ক মানুষ নানা ধরনের অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর ও হিটস্ট্রোকে।
সময় জার্নাল/এলআর