সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
বিসিএস (শিক্ষা) সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি চারকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নিমিত্তে স্নাতক ইঞ্জিনিয়ারিং সনদের পাশাপাশি সম্মান সমতুল্য সনদ প্রদানের দাবি জানিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ২টায় উপাচার্যের বাংলোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেনের নিকট স্মারকলিপিটি জমা দেওয়া হয়।
এর আগে দুপুর ১টায় দাবি নিয়ে উপাচার্যের সাথে দেখা করতে তার কার্যালয়ে যান শিক্ষার্থীরা৷ কিন্তু তখন উপাচার্য তার বাংলোয় পূর্ব নির্ধারিত একটি মিটিংয়ে আছেন জানলে তারা গিয়ে বাংলোর ফটকে অবস্থান নেন। সেখানে এক ঘন্টা অবস্থানের পর প্রক্টরিয়াল বডির সাথে সমঝোতায় শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সাথে দেখা করতে বাংলোর ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু উপাচার্যের সাথে দেখা করার অনুমতি না মিললে তারা সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেনের কাছেই স্মারকলিপিটি জমা দিয়ে তাদের অবস্থান ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ড. আমজাদ হোসেন বলেন, উপাচার্য স্যার একটি সেনসিটিভ মিটিংয়ে ছিলেন। আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্মারকলিপিটি নিয়ে উপাচার্যের পি. এস এর নিকট হস্তান্তর করেছি।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগটির শিক্ষার্থীদের স্নাতক ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ দিয়ে বিসিএস (শিক্ষা) সহ বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করতে পারছে না। এজন্য গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারী স্নাতক (সম্মান) সমতুল্য সনদপত্রের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রশাসন বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেয়। উক্ত আবেদনপত্রটি পর্যলোচনা করে গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদে ১২ তম অনুষদীয় সভায়, ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৬ তম একাডেমিক কাউন্সিলে এবং ২৯মে ২৫৯ তম সিন্ডিকেট সভায় সম্মান সমতুল্য সনদ প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিসিএস, শিক্ষক নিবন্ধন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য চাকরী পরীক্ষার আবেদন সম্পূর্ণ করেছেন এবং সনদপত্র উত্তোলনের জন্য টাকাও জমা দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৭ তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্তটি বাতিল করা হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে স্নাতক ইঞ্জিনিয়ারিং সনদের পাশাপাশি স্নাতক (সম্মান) সমতুল্য সনদপত্র প্রদান করছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েও কেন আবার তা বাতিল করা হলো বিষয়টা বোধগম্য নয়।
এখন আমরা যদি সমতুল্য (সম্মান) সনদপত্র না পাই তাহলে বিসিএস (শিক্ষা), শিক্ষক নিবন্ধন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সকল চাকরীর আবেদন বাতিল হয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে উক্ত সুবিধা থেকে বিভাগের সকল শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত আমাদের দাবির বিষয়টির সমাধান করুক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফ মো. আল-রেজা বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহুতু এমন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও দেওয়া উচিত। যেন শিক্ষার্থীরা চাকুরি ক্ষেত্রে সুযোগ পায়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনও কোন স্মারকলিপি পাইনি। আমার অফিসে এ রকম কিছু আসলে আমি বিষয়টা দেখব। তবে এ সংক্রান্ত বিষয় একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয়বস্তু।
এমআই