নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ভুয়া মৃত্যু সনদ প্রদানের অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা মামলায় এই রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জালজালিয়াতির মাধ্যমে মৃত্যু সনদ তৈরি করার অভিযোগে করা মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। অন্যদিকে আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, তার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ রয়েছে। সে চিকিৎসক না হওয়া সত্ত্বেও মৃত্যু সনদ প্রদান করতো। চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদের সনাক্ত এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ড প্রত্যাশা করছি।
এ সময় শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, চিকিৎসক হিসেবে মৃত্যু সনদ দিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। মিল্টন সমাদ্দার এসএসসি পাস করল, না মাস্টার্স ডিগ্রি পাস করলে সেটা ব্যাপার না। মিল্টন যদি রাস্তার পচাগলা দুস্থ মানুষদের সেবা করে, তাহলে কেন সে মানবতার ফেরিওয়ালা হবে না। মিল্টন সমাদ্দার ভালো কাজ করেছে, কিন্তু সে চক্ষুশূল হয়েছে। প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। হয়রানি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ মামলায় কোনোভাবে রিমান্ড হতে পারে না। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মানুষজনকে মারধর করার অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুন্সী ছাব্বির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মানবপাচার আইনে তার বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি হয়েছে। তৃতীয় মামলার বাদী হলেন রাজধানীর জিগাতলার বাসিন্দা এম রাকিব (৩৫)।
জাল মৃত্যু সনদ তৈরির করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি হয়। এরপর তার আশ্রমের টর্চারসেলে মানুষজনকে মারধর করার অভিযোগে আরও একটি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে আরও একটি মামলা হয়েছে। মানবপাচার আইনের মামলার বাদী হয়েছেন রাজধানীর জিগাতলার বাসিন্দা এম রাকিব।
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে জাল সনদ জালিয়াতির মামলা করেছে। লাশ দাফনের জন্য জালিয়াতি করে কাগজ তৈরির অভিযোগে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে ডিবি পুলিশ। এ সময়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আমরা তাকে রিমান্ডে এনে অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্ত করবো। সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। মিল্টনকে রিমান্ড দেওয়ার সময় তার স্ত্রীকেও মুখোমুখি করা হবে। যদিও এ ঘটনায় তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এমআই