এম.পলাশ শরীফ:
দীর্ঘ ৪৩ ঘণ্টা সুন্দরবনকে পুড়িয়ে নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন। সোমবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এদিন ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে তৃতীয় দিনের মতো কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নির্বাপণে সাহায্য করেছিল নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড বিমানবাহিনী, বন বিভাগসহ স্থানীয়রা। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক আরও বলেন, আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। কোথাও আগুনোর ফুলকি বা ধোঁয়া নেই। তবে, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আরও ২ দিন কাজ করবে কালো ছাই সাদা করার জন্যে। এর পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বন ত্যাগ করবে।
তিনি বলেন, সুন্দরবনে আগুন লাগার পর থেকে তা নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিস কাজ শুরু করে। টানা দুদিনেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। সোমবার তৃতীয় দিন ভোর সাড়ে ৫টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর একটি বড় দল আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সকাল সাড়ে ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখানে প্রতিবছরই এরকম সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। আর এ ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকবে হবে। সুন্দরবন আন্তর্জাতিক একটি ঐতিহ্য। তাই এই বনকে রক্ষার দায়িত্ব সবার। খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষণ মিহির কুমার দো বলেন, ‘আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনতে সোমবার (৬ মে) ভোর থেকে তৃতীয় দফায় কাজ শুরু করা হয়। এখন আর কোথাও আগুন এমনকি ধোঁয়াও বের হচ্ছে না। কাজেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে যেহেতু বনের আগুন তাই বনবিভাগের পক্ষ থেকে আরও দুই দিন এই এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখব।’ তিনি বলেন, ‘এই আগুনে এখন পর্যন্ত কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ সহকারী বনসংরক্ষক রানা দেব জানান, গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত বন বিভাগ এককভাবে আগুন নেভাতে পাম্প মেশিন দিয়ে পানি স্পে করেছে। এর ফলে তেমন একটা আগুন দেখা যায়নি। যেখানে ধোঁয়া দেখা গেছিল সেখানেই পানি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আগামী দুই দিন এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে পানি ছিটানো হবে। তবে আপাতত আর ভয়ের কোনো কারণ নেই। কারণ আগুন যাতে আর ছড়াতে না পারে সেজন্য রবিবার ফায়ার লাইন কেটে সেখানে পানি দিয়ে রাখা হচ্ছে। আর আগুনের অস্তিত্ব তেমন একটা নেই, শুধু কিছু কিছু জায়গায় ধোঁয়া রয়েছে। গত শনিবার দুপুরে সুন্দরবনের আমরবুনিয়ার লতিফের ছিলা এলাকায় আকস্মিক এ আগুন লাগে। এদিকে আগুন লাগার কারণ এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি বন বিভাগ। তবে তা উদ্ঘাটনে কাজ করছে বন বিভাগের তদন্ত কমিটি। #
বনের লতিফের ছিলা ও ড্রেনের ছিলার মাঝামাঝি এলাকায় আগুন লাগার বিষয়টি গত শনিবার নজরের আসার পর থেকেই নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে বন বিভাগ, কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রæপ (সিপিজি), ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), টাইগার টিমসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও বনজীবীরা। তবে ঘটনাস্থল থেকে পানির উৎস দূরে হওয়ায় এবং দুর্গম পথের কারণে প্রথম দিনে সেখানে পানি ছিটানো সম্ভব হয়নি।
এমআই