জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলের লোহাগড়ায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী নেতা সিকদার মোস্তফা কামাল (৫৫) নিহত হয়েছেন। পরে আরেক দফায় গোলাগুলিতে প্রতিপক্ষের আরও দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুন্দশী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিকদার মোস্তফা কামাল উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের মঙ্গলহাটা গ্রামের আকরাম সিকদারের ছেলে। তিনি ইউনিয়নটির দু’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া বাজার থেকে মঙ্গলহাটা নিজ গ্রামে ফেরার পথে কুন্দশী মোড় এলাকায় প্রতিপক্ষ আকরাম হোসেন লিপন মেম্বারের লোকজন মোস্তফা কামালের ওপর গুলি চালায়।
এতে আহত অবস্থায় লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১১টায় মারা যান তিনি।
এদিকে প্রতিপক্ষ আকরাম হোসেন লিপন মেম্বার সমর্থিতরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার ঘটনার পর সাবেক চেয়ারম্যান সমর্থিত লোকজন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মঙ্গলহাটা গ্রামে তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় ফয়সাল শেখ ও পলাশ মোল্লা নামের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলে কলেজে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন থেকে সিকদার মোস্তফা কামাল ও আকরাম হোসেন লিপন দুজনেই নির্বাচন করে পরাজিত হন। মোস্তফা কামাল ইউনিয়নটিতে দুবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের সময় থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
২০২২ সালে সাবেক চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামাল সমর্থিত লোকজন সাবেক ইউপি সদস্য আকরাম হোসেন লিপনের হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ ঘটনার পর দু’পক্ষই থানায় মামলা করেন।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সৈয়দ ফরহাদ বিন হক বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রথমে একজন সাবেক চেয়ারম্যান গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আসেন।
পরে রাত ১০টার দিকে আরও দুই জনকে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত যে তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের স্থানান্তর করা হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, গ্রাম্য আধিপত্যের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। সাবেক চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথেই মারা গেছেন।
পরে আরও একবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, তাতে দুইজন আহত হয়েছেন। গোলাগুলির ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে, এলাকায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর