রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শুধু সমর্থন নয়, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব শিক্ষকদের

রোববার, মে ১২, ২০২৪
শুধু সমর্থন নয়, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব শিক্ষকদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

অধ্যাপক সারা ফিলিপ্সের ঘটনার পর শুধু শিক্ষার্থীদের সমর্থন নয়, পুলিশ এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেও নেমেছেন অধ্যাপকেরা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন।

এই প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি শোনা গেছে অন্য অধ্যাপকদের গলাতেও। ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রণব জানির মতে, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। কোনো শান্তিপূর্ণ আলোচনা করার পরিবর্তে তারা সশস্ত্র পুলিশ ডেকে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করছেন। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের দিকে নজর রাখছে স্নাইপার পুলিশ, তাদের জেলে পাঠানো হচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটনে গত ২৭ এপ্রিল যখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে সশস্ত্র দাঙ্গা পুলিশ নামানো হয়েছিল, তখন ক্যাম্পাসেই ছিলেন নৃতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সারা ফিলিপ্স। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ফিলিপ্স তখনই ছোটেন শিক্ষার্থীদের জমায়েতের দিকে। কিন্তু সেখানে যেতেই তাকে মাটিতে ফেলে, হাত পিছমোড়া করে বেঁধে, গ্রেফতার করে পুলিশ।

তার বিরুদ্ধে নিজের ক্যাম্পাসেই বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়। অধ্যাপক ফিলিপ্সকে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে দু’জন পুলিশ- এই ছবি দেশ-বিদেশের অসংখ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এবং সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।

ফিলিপ্স ছাড়া ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো তিনজন অধ্যাপককে সে দিন গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন চার্জ আনা হয়। জামিন পেলেও তাদের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশের উপরে অন্তত এক বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ব্রাইস গ্রিন নামের এক অধ্যাপকের পাঁচ বছরের জন্য ক্যাম্পাসে প্রবেশের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

একইভাবে আটলান্টার এমরি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারপার্সন নোয়েল ম্যাকাফি ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখেছিলেন, তাতে অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষ যখন সশস্ত্র পুলিশ ডেকে শিক্ষার্থীদের উপরে শারীরিক বলপ্রয়োগ করে গ্রেফতার করতে শুরু করে, অধ্যাপক ম্যাকাফি সেখানে পৌঁছে যান এবং গ্রেফতার হন।

একইভাবে নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডার্টমাউথ কলেজের অধ্যাপক আনেলিস ওরলেককে পুরোপুরি বলপ্রয়োগ করে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ্য, অধ্যাপক ওরলেক দীর্ঘদিন ডার্টমাউথ কলেজের ‘জিউইশ স্টাডিজ’ বা ইহুদি-বিষয়ক পাঠের অন্যতম বিশেষজ্ঞ। তিনি নিজেও ইহুদি। তার কথায়, ‘‘'ইহুদি বিদ্বেষ' দমনের নাম করে এভাবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।’’ তাকেও আপাতত কলেজ ক্যাম্পাস থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে দিন অবস্থান বিক্ষোভ তোলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, সে দিন শিক্ষার্থীদের ঘিরে পুলিশের সামনে মানবশৃঙ্খল তৈরি করে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষকেরা। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসে ইসরাইল-সমর্থক এবং ইসরাইল-বিরোধী শিক্ষার্থীরা যে দিন মুখোমুখি হয়েছিলেন, সে দিন দু’দলের মাঝখানে সার বেঁধে দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষকেরা, যাতে বড় কোনো গন্ডগোল না হয়। তাছাড়া, বেশ কিছু ক্যাম্পাসে দেখা গেছে যে অধ্যাপকেরা ছাত্রছাত্রীদের তাঁবুর কাছে বসে ক্লাসও নিচ্ছেন।

ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর এই কাজটা সহজ নয়। এতে অধ্যাপকদের চাকরি বা গবেষণার ফান্ডিং হারানো, ডাক্তারি বা নার্সিংয়ের অধ্যাপকদের লাইসেন্স হারানোসহ আরো নানা ঝুঁকি আছে। তাও তারা ঝুঁকি নিচ্ছেন। কারণ, অধ্যাপক ফিলিপ্সের কথায়, ‘এই পাগলামি থামাতেই হবে।’

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল