নিজস্ব প্রতিনিধি:
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত ও চীনের ভূমিকা মুখ্য বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ দুটির (ভারত-চীন) অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান সম্ভব।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সংগঠন ওভারসিস করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওকাব) ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘রোহিঙ্গা সংকট: ভবিষ্যৎ পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক চাপ যদি অব্যাহত রাখা যায়, আদালতের রায় আমাদের পক্ষে আসলে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন শুরু করবে আশাকরি। এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে যে মামলা করেছি তার রায় আমাদের পক্ষে আসছে। আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের উপর প্রভাব আছে এমন দেশের সাথে আমরা সম্পর্ক রাখছি। ভারত ও চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে অত্যন্ত মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের এখন যে পরিস্থিতি তাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেশ থেকে পালাচ্ছে। এমন অবস্থায় আমরা রোহিঙ্গাদের ঠেলে দিতে পারি না। ৬ লাখের অধিক রোহিঙ্গা এখনো মিয়ানমারে আছে, যারা চেষ্টা করছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে আসতে। প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান নয়, তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে ফেরত পাঠানোই আসল সমাধান।
তিনি আরও বলেন, উগাণ্ডায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলে মনে হয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে সম্পর্ক ভালো রাখতে তারাও রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার প্রসেস শুরু করতে ইচ্ছুক। আমরা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা করছি। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিগত সংঘাত সবসময়ই ছিল কিন্তু এটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় না করিয়ে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মানবতার খাতিরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দেন। সরকার তাদের দেশে পাঠাবার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তবে তার জন্য কিছুটা সময় ও ধৈর্য দরকার। আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে কিন্তু এ ব্যর্থতা বারবার হবে না।
তিনি আরও বলেন, ভাসানচর নিয়ে অনেক বিদেশি-দেশি সাংবাদিক নেতিবাচক কথা লিখেছে, যা সঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ সচেতন। আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে অন্য যতই ইস্যু আসুক না কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওকাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক অধ্যাপক ডক্টর দেলোয়ার হোসেন, ওকাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জুলহাস আলম, ফরিদ হোসেন প্রমুখ।
সময় জার্নাল/এলআর