আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর দেশটিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। রাইসির মৃত্যুর আগে থেকেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছেলেকে তার পিতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরসূরির সম্ভাব্য প্রার্থী বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিবেদন- দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
৫৫ বছর বয়সী মোজতবা খামেনি ইরানের রাজনীতিতে অন্তরালের মানুষ হিসেবে পরিচিত। তবুও রাজনীতিতে মোজতবা খামেনির একটি শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। রাইসির মৃত্যুর আগে শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরসূরি হিসেবে তার নামই বার বার উঠে এসেছিল।
কিন্তু রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর পর মোজতবা খামেনি ইরানের পরবর্তী নেতা হতে যাচ্ছেন সেই জল্পনা আরও বেড়েছে। তবে অনেক বিশ্লেষক বলেছেন, ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতার অবসর এবং তার জায়গায় নতুন উত্তরসূরি আসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
অনেকেই মনে করছেন রাইসির মৃত্যু শুধু নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সূচনাই করবে না একইসাথে আয়াতুল্লাহ খামেনির স্থলাভিষিক্ত হওয়ার নির্বাচনকেও নতুন মোড় দেবে।
ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির লেকচারার আরাশ আজিজি বলেন, ২০০৯ সালের দিকে মানুষ সর্বপ্রথম মোজতবা খামেনীকে একজন সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে কথা বলতে শুরু করে। তখন আমি এটিকে একটি সস্তা গুজব বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু এখন আর তেমনটা নয়। এটা এখন খুব স্পষ্ট যে, মোজতবা খামেনী একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। তিনি অসাধারণ কারণ তিনি জনসাধারণের চোখে প্রায় সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য ছিলেন।
আরাশ আজিজি আরও বলেন, ইরানের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান অংশ প্রকাশ্যে মোজতবা খামেনীকে সমর্থন করতে শুরু করেছে।
মোজতবা খামেনি আয়াতুল্লাহর আলী খামেনীর ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় পুত্র। তিনি একজন রক্ষণশীল হার্ড-লাইনার হিসেবে পরিচিত। মোজতবা খামেনি ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী প্রজাতন্ত্রের করণিক এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের মধ্যে বেড়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে শক্তিশালী বিপ্লবী গার্ডের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখন, তিনি তার বাবার অধিদপ্তর পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলে মনে করা হয়।
আয়াতুল্লাহ খামেনি তার ছেলেকে উত্তরাধিকার বিবেচনার তীব্র বিরোধী ছিলেন বলে বার্তা সংস্থা আইএলএনএকে বলেছেন সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনকারী বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য আলেম মাহমুদ মোহাম্মদী আরাঘি।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উত্তরাধিকার বিষয়ে আলোচনায় খামেনি এমন মনোভাব প্রকাশ করেন বলে জানান তিনি।
ইরানের নীতি অনুযায়ী, সর্বোচ্চ নেতার আসন শুন্য হলে বিশেষজ্ঞদের সমাবেশকে সর্বসম্মতিক্রমে সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করতে হবে। ততদিন পর্যন্ত তারা দেশ পরিচালনার জন্য তিন বা পাঁচ সদস্যের নেতৃত্ব পরিষদ বেছে নিতে পারবে।
সময় জার্নাল/এলআর