মো. নিজাম উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর : জেলার রামগতির চর কলাকোপাতে ভূমিহীনদের জন্য একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে স্থানীয়রা।
জমির মালিকানা দাবি করে চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামের বাসিন্দা নুর নবী ও অজি উল্যা গং এ মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ওই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ না করতে জেলা প্রশাসকের কাছেও একটি লিখিত আবেদন জানিয়েছেন নুর নবীগংসহ ২৮ জন।
স্থানীয় ভূমি অফিস বলছে, সরকারী খাস (১নং খতিয়ান) জমিতে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কোন ব্যক্তি মালিকানা জমিতে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে না।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর, রামগতি সহকারী জজ আদালতে গত ২৪ মে একটি দেওয়ানী মামলা করে স্থানীয় নুর নবী গং। মামলা নং-৪৩৬/২০২১। এতে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও চর বাদাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত বিবাদীদের প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।
সোমবার (৭ জুন) সকালে রামগতির কলাকোপা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ২৪ নং চর কলাকোপা মৌজার একটি ভূমিতে মুজিববর্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৬০ ঘর নির্মাণের কাজ করছে শ্রমিকরা। তবে স্থানীয় কয়েকজন ওই জমি ব্যক্তি মালিকানা হিসেবে দাবি করেন। এ সময় তারা কয়েকটি দলিলের ছায়াকপি প্রদর্শন করেন।
এ সময় তারা দাবি করেছেন, চর কলাকোপা মৌজাতে সরকারী খাস জমি রয়েছে। ওই জমির পাশ্ববর্তী ১৮৫ দাগে ৭২ শতাংশ জমি অজি উল্যাগং ১৯৬৮ সালে সবুরা খাতুনের নিকট থেকে ক্রয় করে। একই সালে হনুফার কাছ থেকে এক একর সাড়ে ৫৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে ভোগ দখলে ছিলেন। এছাড়া ১৯৯৯-২০ সালে মো. সেকান্তর সর্দার ও মুক্তা বেগম নামে দুই ব্যক্তি সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত নেয়। ওই জমি স্থানীয় নুর নবীকে আম-মোক্তারনামা দেয় ওই দুইজন। এর ভিত্তিতে তিনি জমিতে ভোগদখলে ছিলেন।
এ বিষয়ে রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুচিত্র রঞ্জন দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কেউ যদি কোন জমির লিগ্যাল মালিকানা দাবি করে বা তার মালিকানা স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র থাকে- ওই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয় না। যাচাই-বাচাই করেই সরকারী খাস জমিতে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কারণ অন্যের মালিকানাধীন জমি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেওয়া সম্ভব নয়। এছাড়া কাউকে ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে অন্যকে পুনর্বাসন করার নিয়ম নেই।
তিনি আরও বলেন, চর কলাকোপা মৌজার যে জমিতে আশয়ণের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে তা সরকারী খাস জমি। স্থানীয় যারা জমির মালিকানা দাবি করছে- তারা মালিকানা স্ব-পক্ষে সঠিক কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তারা সবুরা এবং হনুফা নামে যে দুইজন দাতার কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছে বলে দাবি করেছে। ওই দুই দাতার জমি ১৯৭৮-৮৯ সালে মিসকেস এর কারণে জমির অংশ কমে গেছে। এছাড়া অজি উল্যাগং নিজেদের মালিকানার থেকে আরও বেশি জমি দখলে রেখেছেন বলে জানান তিনি।
নুরনবীগং’র অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারী বন্দোবস্ত জমি আম-মোক্তার নামা দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। দিলেও আইনগত কোন বৈধতা নেই। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাঁর যুক্তির স্বপক্ষে বিভিন্ন নথি উপস্থাপন করেন।
সময় জার্নাল/আরইউ