সৌরভ শুভ, জাবি প্রতিনিধি:
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ঈদ উপহার বিতরণ করেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা হেল্পিং ফান্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত এ ফান্ড থেকে শতাধিক মানুষের হাতে এ ঈদ উপহার তুলে দেয়া হয়।
বুধবার (১২ জুন) বিকাল চারটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে এ উপহার বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এসময় শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে শাড়ি, লুঙ্গি ও জামা বিতরণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে জীবিকার সুবাদে সেবাপ্রদানকারী রিকশাচালক, বয়স্ক মহিলা, শিশু, বিভিন্ন খাবার দোকানে কর্মরত ও সুবিধাবঞ্চিতদের হাতে এই উপহার তুলে দেয়া হয়।
এসময় তাদের মাঝে ঈদ উপহার তুলে দেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. সালাহউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট আব্দুল্লাহ হেল কাফি, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান, ইন্সটিটিউট অব রিমোট সেন্সিং এর পরিচালক অধ্যাপক শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম, শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট ও ইন্সটিটিউট অব পাবলিক হেলথ এর অধ্যাপক ড. তাজউদ্দিন সিকদার, আ ফ ম কালামউদ্দিন হলের প্রভোস্ট ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ—উল—হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সমাজবিজ্ঞানের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা হেল্পিং ফান্ড তাদের ধারাবাহিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিত্তবানরা এ সহায়তা কার্যক্রমকে আরো বেগবান করবেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সালাউদ্দিন বলেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে ভাবে এমন মানুষদের সংখ্যা নিতান্তই কম। কাঞ্চনজঙ্ঘার এ সহায়তা কার্যক্রম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক এ কামনাই করছি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা হেল্পিং ফান্ডের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা হেল্পিং ফান্ডের এ সুন্দর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আশা করি এ উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে। এ উদ্যোগের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কাঞ্চনজঙ্ঘা হেল্পিং ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা মো.ফরহাদ আলী শুভ বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনে শিক্ষা ও গবেষণার পাশপাশি ইতিবাচক ভাবনায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অগ্রগতির লক্ষ্যে সেবা ও সচেতনতার জন্য শিক্ষার্থীসুলভ সুবোধকে জাগানো উচিত। নিজ নিজ জায়গা থেকে সমাজের জন্য সৃষ্টিশীল কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে। যা নেতিবাচকতা থেকে দূরে রেখে মঙ্গলজনক সুর বয়ে আনবে সমাজের জন্য। আমার সাথে এ কাজে জাবির শ্রদ্ধেয় কয়েকজন অগ্রজ, অনুজ ও সংগঠনের উপদেষ্টাবৃন্দ জাবির সাবেক শিক্ষার্থীরা যারা বর্তমানে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তারা সম্পৃক্ত আছেন। সমাজে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।
এ বিতরণ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা ও অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করেন ইউজিসি অধ্যাপক, সিনেট সদস্য ও সাবেক উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন, সাবেক ডিন ও পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, বিশ্ব নন্দিত পদার্থ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এ. এ. মামুন।
উল্লেখ্য, কাঞ্চনজঙ্গা হেল্পিং ফান্ড ২০১৯ সাল থেকে পর্যটন সম্ভাবনাময় উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন পেশার মানুষের মাঝে ঈদ উৎসব, করোনা মহামারি, মসজিদ সংস্কার, অসহায় মানুষের চিকিৎসা, শীতের উষ্ণতা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য বিভিন্ন উপহার প্রদান করে আসছে।
এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ ও বিভিন্ন ফলদ গাছ বিতরণ করে আসছে। পঞ্চগড় জেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে ফলদ, বনজ ও ফুলজ গাছ রোপণ করে উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আসছে সংগঠনটি।
সময় জার্নাল/এলআর