কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান দুই নদী তিস্তা ও দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে অপর দুই প্রধান নদী ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে তা বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রামের সবগুলো নদ-নদীর পানি বেড়ে জেলায় একটি স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)'র বন্যা পুর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় পাউবো’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এরইমধ্যে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২২ সেন্টিনিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫ ও ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার একেবারে কাছাকাছি রয়েছে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলায় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
দুধকুমার ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার রাজারহাট ও নাগেশ্বরী উপজেলার ১২টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বাড়তে থাকায় সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে এবং চিলমারীর কয়েকটি পয়েন্টে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সদরের পাঁচগাছির কৃষক জয়নাল শেখ জানান, তার ১৫ শতক জমিতে পটলের আবাদ করেছিলেন। ধরলা নদীতে পানি বাড়ায় সব তলিয়ে গেছে। অনেক টাকা লোকসান গুনতে হলো। চর কুড়িগ্রামের বাসিন্দা শিমুল মিয়া জানান, আগের রাত থেকে নদীর পানি বাড়তে থাকায় তার বাড়ির সামনের রাস্তা তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, উজানে ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার ভিতরে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। এতে করে স্বল্পমেয়াদী মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, জেলায় প্রাথমিকভাবে বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে ১৭ লাখ টাকা ও ১৮০ মেট্রিক টন জিআর চাল মজুদ আছে। উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য বেশকিছু নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরইউ