বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
যদি লক্ষ্য থাকে অটুট,বিশ্বাস ও চেষ্টা তবে কোন বাধা থামাতে পারে না কাউকে। এমনই দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন ঐতি রায়।সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে আলোকিত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে ঐতি । চোখের আলো নাই তবে মনে আলোয় জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার স্বপ্নে এগিয়ে চলছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফল করেছে।
মায়ের শ্রুতিলিখন ও পঠনের সহায়তায় পড়ালেখা এবং একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ৩৯ পেয়ে ‘এ’ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে ঐতি।
অদম্য মেধাবী এই ঐতি’র পাশে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন খবরের কাগজ “বন্ধুজন”।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কক্ষে সিডব্লিওএফ অদম্য মেধাবী ঐতি’র হাতে খবরের কাগজ “বন্ধুজন” বৃত্তি নগত আর্থ তুলে দেন,বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাঃ খালিদ হোসেন,খবরের কাগজ এর বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি রিফাত আল মাহামুদ,বাগেরহাট প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান,এনজিও ব্যক্তিত্য শেখ মোঃ আসাদ এবং ঐতি’র মা শংকরি রায় ও বাবা অনুপম রায়।
ঐতির বাবা অনুপম রায় বলেন,খবরের কাগজ “বন্ধুজন” আর্থিক সহযোগিতা করেছেন এ জন্য আমি খবরের কাগজ “বন্ধুজন” কে ধন্যবাদ জানাই।‘জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন।আমার মেয়ে এসএসসিতে ভাল রেজাল্ট করবে ভাবতে পারিনি। ছোটবেলা থেকে তার পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই আগ্রহ ছিল। আমরা তাকে যত্ন করে স্কুলে ভর্তি করে পড়াশোনা করাই।’ ঐতিকে মোংলা কলেজে ভর্তি জন্য আবেদন করেছে।
তিনি জানান, একমাত্র মেয়েকে তার মা প্রথমে শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বাড়িতে পড়ালেখা শেখান। এভাবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার মেয়ে। পরীক্ষা হলে ঐতি মুখস্থ বলত আর একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বিজয়া হালদার তা পরীক্ষার খাতায় লিখত। এভাবে সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
ঐতির মা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ঐতির পড়াশোনার আগ্রহ দেখে তাকে স্কুলে নিয়ে যেতাম। ওর জীবনের স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করবেই। এখন সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভালোভাবে পাস করেছে। আমরা ভীষণ খুশি, স্রষ্টার কাছে সেই সাথে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ,বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাঃ খালিদ হোসেন,খবরের কাগজ, আমার মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্যে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন বলে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাঃ খালিদ হোসেন খবরের কাগজ “বন্ধুজন” এর এমন উদ্যোগকে ম্বাগত জানিয়ে বলেন,খবরের কাগজ “বন্ধুজন”দৃষ্টিহীন অদম্য মেধাবী ঐতিকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন এতে একদিকে ঐতি’র আর্থিক সহযোগিতা হলো অন্যেদিকে ঐতি’র পড়াশুনার প্রতি আগ্রোহও বাড়লো।বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ঐতিকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
খবরের কাগজ “বন্ধুজন” কে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দৃষ্টিহীন অদম্য মেধাবী ঐতি রায় বলেন, খবরের কাগজ “বন্ধুজন” আজ আমাকে য়ে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন,এটা আমার ইচ্ছাকে আরো বাড়িয়ে দিল।আমার স্বপ্ন পুরনে প্রেরনা হিসেবে খবরের কাগজ “বন্ধুজন” এর আজকে এই সহযোগিতা।
‘জন্ম থেকে আমি দৃষ্টিহীন। কিন্তু পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছে ছিল আমার। সেই ইচ্ছে থেকেই আমি এসএসসি পাশ করেছি।পড়াশোনার কাজে আমার মা আমাকে সহযোগিতা না করলে আজ এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। মা পাশে বসে রিডিং পড়ত, আমি সেটা মুখস্থ করতাম। এভাবেই লেখাপড়া চালিয়ে এসেছি।’ পড়াশোনা শেষ করে সরকারি একটা চাকরি এবং আবৃত্তির শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নের কথাও জানায় ঐতি।
এমআই