সময় জার্নাল, নিজস্ব প্রতিবেদক: হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য বৈষম্যমূলক। তাই হল-ক্যাম্পাস না খুলে অনলাইন বা অফলাইন পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সামনে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা করেন হল-ক্যাম্পাস খুলেই সশরীরে পরীক্ষা নেয়া হোক।
রোববার (১৩জুন) সকাল ১১ টায় রাজধানীর ইউজিসি ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, “হল ক্যাম্পাস বন্ধ রেখে অনলাইন বা অফলাইনে পরীক্ষা নেয়া বৈষম্যমূলক। এতে অনেক দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। অনেকে ঝরে পড়বে। দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। ব্যয়বহুল ও শহুরে ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া আর দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের ঘাড় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া একই কথা। তাই হল-ক্যাম্পাস খুলেই পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে।
মানববন্ধনে ‘অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান বলেন, অনলাইনে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন। আমাদের একটাই দাবি হল-ক্যাম্পাস খুলে এরপর সশরীরে পরীক্ষা নিতে হবে। অনলাইনে যেখানে ঠিকমতো ক্লাস করাই সম্ভব হয়নি, সেখানে পরীক্ষা দেয়া কি সম্ভব?
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও বেসরকারি সংস্থা একশনএইড এক জরিপ করে দেখেছে, ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন পাঠের বাইরে। যারা এতদিন ক্লাস করেনি, তারা পরীক্ষা দেয়ার জন্যও প্রস্তুত নয়। যদি সশরীরে ক্লাস না নিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়, তাহলে তা ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য গ্রহণযোগ্য হবে, কিন্তু ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য গ্রহণযোগ্য না। ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থীকে প্রতি এ ধরনের বৈষম্য কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
উপস্থিত শিক্ষার্থী বলেন, হল না খুলে পরীক্ষা নেয়া এক ধরনের তামাশার বিষয়। একজন শিক্ষার্থী উত্তর বঙ্গ থেকে এসে পরীক্ষা দিবে? পরীক্ষা দিয়ে কি সে আবার গ্রামে ফিরতে পারবে একদিনেই? পরীক্ষা দিতে এসে দেশের এতগুলো শিক্ষার্থী থাকবে কোথায়? করোনায় শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা আরো খারাপ মেস ভাড়া নিয়ে যে পরীক্ষার জন্য থাকবে সে অবস্থা ও নেই।
আর অনলাইনে ক্লাসে আমরা দেখেছি শতকরা ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীই ইন্টারনেট সমস্যার কারনে ক্লাস করতে পারেনি। তাহলে পরীক্ষা কিভাবে দিবে অনলাইনে? তাই শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরন না করে হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হোক এটাই আমাদের দাবি।
এরমধ্যে মেস ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা তারা পাবে কোথায় ? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরীক্ষা ফেলতে পারে, কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। পরীক্ষা না দিতে পেরে তারা ঝরে পড়বে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের নিকৃষ্ট বৈষম্য কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, শিক্ষা সবার জন্য মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্ত। “কেউ শিক্ষা পাবে, কেউ শিক্ষা পাবে না, তা হবে না, তা হবে না”।
সময় জার্নাল/এমআই