বিনোদন প্রতিবেদক : ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি।
রোববার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ তোলার কয়েক ঘণ্টা পর ঢাকার গুলশানে নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
এই অভিনেত্রী অভিযোগ করেছেন ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি) নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি নিজ বাসায় পুরো ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বার বার বলেন, ‘আমি মরে গেলে বুঝবেন খুন করা হয়েছে, আত্মহত্যা নয়। কারণ, আমি আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে নই।
‘আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই। এর বিচার দেখে মরতে চাই। আর যদি আমাকে কেউ হত্যা করে, তখন আপনাদের কাছে সেই বিচারের ভার দিয়ে গেলাম। আবারও বলছি, আজ যদি আমি মরে যাই, তো সেটি আত্মহত্যা হবে না। ধরে নেবেন আমাকে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আমি এখন খুব বিশ্বাস করি, একজন সাধারণ মেয়ে যদি ভিকটিম হয়, আত্মহত্যা ছাড়া তার আর কোনো পথ খোলা থাকে না। সাধারণ মেয়ে হিসেবে গত চারদিন ধরে অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কেউ সহযোগিতা করেনি। একজন পরীমণি হিসেবে ফেসবুকে যখন স্ট্যাটাস দিলাম তখনই মিডিয়া এসেছে।
পরীমণি জানান, গত বুধবার রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমির সঙ্গে উত্তরার বোট ক্লাবে যান তিনি। সেখানে গিয়ে দেখেন নাসির ইউ মাহমুদসহ চার-পাঁচজন টেবিলে বসে আছেন। তাদের সঙ্গে পরীমণির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। বোট ক্লাবে সেদিন টেবিলে মদের বোতল ছিল। নাসির ইউ মাহমুদ মদপানের প্রস্তাব দিলে সেটি নাকচ করেন তিনি। এরপর তাকে কফি খেতে দেওয়া হয়।
পরী জানান, কফির কাপে তিনি আনন্দ নিয়ে চুমুক দিলেও স্বাদ খানিক অস্বাভাবিক মনে হয় তার। তাই তিনি কফি পান আর করেননি। এমনকি টেবিলে থাকা ঠাণ্ডা পানীয়তেও তিনি মুখ দেননি। বিপরীতে বার বার এগুলো পান করার জন্য তাগিদ দিচ্ছিলেন নাসির ইউ মাহমুদ। সেটি না শোনায় পরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন নাসির ইউ মাহমুদ। এরপর পরীমণি টেবিল থেকে উঠে ওয়াশরুমে যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। এরপর বাসায় যেতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয়।
পরীর অভিযোগ, নাসির ইউ মাহমুদ তাকে লাথি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেন এবং মুখের ভেতর জোর করে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন। এতে তার দাঁতে আঘাত লাগে এবং কিছু মদ গলায় যায়। এতে তার গলা ও বুক জ্বলে। তিনি তখনই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা জেমী তখন চিৎকার ও কান্না শুরু করলে তাদের ধর্ষণ করার হুমকি দেওয়া হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়।
একটা সময় তারা সেখান থেকে ছাড়া পেলে সঙ্গে সঙ্গে বনানী থানায় লিখিত অভিযোগ জানান পরী। তার অভিযোগ, থানা তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি।
পরীমনির এসব অভিযোগের বিষয়ে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদকে।
সময় জার্নাল/আরইউ