নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ম ভেঙে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত। এবার সেই ৫৭ জনসহ কোটা আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অন্যান্য দেশে বিক্ষোভ করায় আটক সব বন্দির মুক্তি চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) চেয়ারপারসন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ রোববার (১৮ আগস্ট) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গত ১৯ জুলাই আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করেন। পরে আবুধাবির ফেডারেল কোর্ট অব আপিল ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া যে কোনো ধরনের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ।
আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ জানান, তখন (দূতাবাসের) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দুবাইয়ের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, এরা (প্রবাসী বিক্ষোভকারীরা) সন্ত্রাসী, এরা স্বাধীনতাবিরোধী, এদের অ্যারেস্ট করলে ওনাদের আপত্তি নেই। যে কারণে তাদের কোনো প্রকার আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়নি। বরং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি অ্যাম্বাসিতে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, এদের (বিক্ষোভকারীদের) চুপ করাতে হবে, শাস্তি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাসহ পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছি। ওনারা যেন রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। আমরা দেশ থেকে লিগ্যাল সাপোর্ট দেবো।
ফাওজিয়া করিম বলেন, দুবাইয়ের যিনি কনসাল জেনারেল (বিএম জামাল হোসেন), এই ৫৭ জনের দণ্ডের জন্য উনিই কিন্তু সবচেয়ে বেশি দায়ী ব্যক্তি। দণ্ডিতদের কোনো ধরনের লিগ্যাল সাপোর্ট দেননি। উনি ওদের (বিক্ষোভকারীদের) স্বাধীনতাবিরোধী বলেছেন। এটা খুব ফেভারিট ডায়ালগ ছিল।
‘স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির, যদি দ্বিমত পোষণ করতো তখন আপনি হয়ে যেতেন আরেক দলের ব্যক্তি। আপনি স্বাধীনতাবিরোধী। যখন মানবাধিকার কমিশনে ছিলাম তখন এ কথা আমি নিজেও শুনেছি।’
তিনি বলেন, শুধু এই ৫৭ জনই নন, আরও বেশিসংখ্যক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকি শুধু আমিরাতেও নয়, অন্য অনেক দেশেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের কাছে কিছু আত্মীয়স্বজন এসেছেন। যারা দণ্ডিত ৫৭ জনের পরিবারের মধ্যে পড়ছেন না।
ফাওজিয়া করিম বলেন, আমরা আন্দোলনে সংহতি জানানো দণ্ডিত বা গ্রেফতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবো। আমরা দুবাইতে সেই চেষ্টা করছি। সরকারকেও অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এমআই