জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজন সেনের অপসারণের দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য বরাবর সাত পৃষ্ঠার একটি লিখিত অভিযোগ পত্রসহ বেশকিছু তথ্যাদি জমা দিয়েছেন তারা। এছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়ার জন্য বিভাগকে ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, অনিয়ম, দলান্ধ, স্বেচ্ছাচারী, অশোভনমূলক আচরণ এবং একাডেমিক কাজে অদক্ষতার অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা সুজন সেনের অপসারণের দাবিতে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভাউচার সুজনের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘এক দফা এক দাবি, সুজন তুই কবে যাবি’, ‘সুজনের চামচারা হুশিয়ার সাবধান’, ‘চারুকলায় দুর্নীতি, চলবে না চলবে না’, ‘চারুকলায় তেলবাজি চলবে না চলবে না’, ‘তেলবাজি না সংগ্রাম সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘সুজনের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। পরে দুপুর ১টার দিকে ওই শিক্ষকের প্রতি তিরষ্কার ও ঘৃণা প্রকাশ করে কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা।
শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, সহযোগী অধ্যাপক সুজন সেন একাডেমিক কাজে একজন অযোগ্য শিক্ষক। চারুকলার প্রতিটি বিষয় ব্যবহারিক সম্পর্কিত হওয়া সত্বেও তিনি কর্মজীবনে কখনো শিক্ষার্থীদের হাতেনাতে ব্যবহারিক কাজ শিখিয়ে দেননি। এ ছাড়া তিনি দুর্নীতিবাজ, দলান্ধ, স্বেচ্ছাচারী এবং ছাত্রদের সঙ্গে অশোভনমূলক আচরণ করেন। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর মতাদর্শের বাইরের শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেন। তাছাড়া পছন্দের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পূর্বে প্রশ্নপত্র ও লুজশিট (অতিরিক্ত খাতা) সরবারহেরও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
লিখিতপত্রে অভিযোগ করে আরও বলা হয়, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ থাকাকালীন বিভিন্ন খাতে আসা বাজেটের একটা নির্দিষ্ট অংশ হাতিয়ে নিতেন সুজন সেন। এতে তিনি লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া শিক্ষক হিসেবে সুজন সেন একজন চরমমাত্রায় অমানবিক। শিক্ষার্থীদের নিজের স্বজন মারা যাওয়ার বিষয়গুলোকেও অগ্রাহ্য করেন তিনি। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বৈরাচারের দোষর হয়ে কাজ করেছেন তিনি।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে সুজন সেনের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এমআই