শারমিন আক্তার কেয়া, কুবি প্রতিনিধি:
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসে দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হলের মেয়েরাও বন্যা বন্যাদুর্গতদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করে কাজ করে বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য।
সংগৃহীত অর্থের সুষ্ঠু বন্টন নিশ্চিত করতে চারধাপে নানাভাবে বন্যায় ক্ষতি গ্রস্ত মানুষদের সহায়তা করে তারা। শিক্ষার্থীদের সংগৃহীত মোট ৬৮,১০০ টাকা থেকে ১৪,৫০০ টাকার শুকনো খাবার, সেনিটারী ন্যাপকিন ও ওষুধ ত্রান সরবরাহ করা হয় বন্যা কালীন সময়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে।
এরপর বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বন্যার্ত এলাকা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ক্ষতিগ্রস্ত ১৯ জন শিক্ষার্থীকে ২৮,৫০০ টাকা উপহার দেওয়া হয়, এছাড়াও বন্যার্ত বিভিন্ন জেলার মোট ১১ টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১৭০০০ টাকা নগদ বন্টন করা হয় এবং সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১২ই সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সাদকপুর গ্রামের ২০ জন কৃষককে জনপ্রতি ৫ কেজি করে মোট ১০০ কেজি বীজ ধান সরবরাহ করা হয় হলটির শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের এরূপ মহতী কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে হলের আবাসিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ তম আবর্তনের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুন নাহার লিলি বলেন, 'আগস্টের বন্যা কালীন সময়ে বন্যার্তদের জন্য তহবিল সংগ্রহ থেকে শুরু করে আজকে পর্যন্ত আমাদের ৬৮,১০০ টাকা বিভিন্ন ধাপে বিতরণ করেছি আমরা। ঢালাওভাবে তহবিল গুলো এক কাজে ব্যয় হলে কিছুটা সংকোচ থাকতো।
আদৌ অর্থ গুলোর সঠিক ব্যবহার হলো কি-না, এ নিয়ে তবে আমরা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা মিলে নানাভাবে তহবিল গুলো বন্যার্তদের জন্য কাজে লাগাতে পেরেছি তাই ভালো লাগছে। সকলে মিলে কোনো কাজ দায়িত্ব নিয়ে করলে আসলে যে কোনো সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব সেটারই সাক্ষী হলাম আমরা।'
হলের আরও এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ তম আবর্তনের আইসিটি বিভাগের নাহিদা আক্তার বলেন, 'এই মহতী কাজের শুরু থেকে শেষ অব্দি অভিজ্ঞতা বেশ রোমাঞ্চকর এবং ভালো। বন্যার্তদের জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজে যেমন বারবার মানুষগুলোর আন্তরিক সহযোগিতায় সিক্ত হয়েছিলাম, তেমনি মানুষের দ্বারে দ্বারে এই সহযোগিতা পৌঁছাতে গিয়েও হয়েছে দারুণ অভিজ্ঞতা। সংকটময় সময়ে মানুষগুলোর পাশে থেকে কাজ করতে পেরেছি এটাই আমাদের প্রাপ্তি। সামনে যখনি দেশ ও দেশের মানুষ সংকটাপন্ন অবস্থায় পরবে ততবার আমরা ছাত্র সমাজ ঢাল হয়ে পাশে দাঁড়াব।'
সময় জার্নাল/এলআর