আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
হিজবুল্লাহর সঙ্গে চলমান সংঘাতের ধারাবাহিকতায় লেবাননে ফের বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০০ জন নিহত ও ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েক দফায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নিহত ও ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, হামলায় নিহত ও আহতদের মধ্যে শিশু, নারী ও প্যারামেডিক সদস্য রয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার সকালে লেবাননে প্রায় ১৫০টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, লেবাননের বন্দর শহর বাইব্লোসের পূর্বে একটি জনবসতিহীন পাহাড়ে একটি রকেট আঘাত হানে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, পূর্ব ও দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, লেবাননে ব্যাপক আক্রমণ শুরু করেছে। হিজবুল্লাহর স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ‘আগাম হামলা’ চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের অধিবাসীদের হিজবুল্লাহর এলাকা থেকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। দক্ষিণ লেবাননের পাশাপাশি রাজধানী বৈরুতের মানুষেরা বলছেন, তাদের মোবাইলে টেক্সট মেসেজ পাঠানো হচ্ছে যে তারা যেন তাদের অবস্থান দ্রুত ত্যাগ করেন। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর এমন হুঁশিয়ারি ও বার্তায় কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির তথ্যমন্ত্রী জিয়াদ মাকারি।
লেবাননে সম্ভাব্য স্থল অভিযান শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, উত্তর ইসরায়েলের উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের তাদের ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন আমরা করব।
গত মঙ্গলবার ও বুধবার পরপর দুইদিন হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার পেজার ও ওয়াকিটকিতে (বেতার যোগাযোগ যন্ত্র) একযোগে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে হিজবুল্লাহর যোদ্ধাসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়। আহত আরও তিন হাজারের বেশি। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে। যদিও তেল আবিব এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। এ দুইটি ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা হিজবুল্লাহ। এতে দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এই হামলার জবাবে পরদিন শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা চালায়। এতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ইব্রাহিম আকিলসহ অন্তত ৪৫ জন নিহত হন। পরদিন শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে লেবাননে আবারও বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে চার শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ফেলা হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। জবাবে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে ইসরায়েলের হাইফা শহরের পূর্বে ‘রামাত ডেভিড’ নামে একটি বিমান ঘাঁটিতে কয়েক ডজন রকেট ছোড়ার দাবি করে হিজবুল্লাহ।
এমআই