নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও তিন দিনের অবিরাম ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন। পানি তিস্তা নদীর বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি কপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যে কোনো মুহূর্তে বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। বিপদসীমা অতিক্রম করলে পানিবন্দী হয়ে পড়বে দুই জেলার কয়েক হাজার মানুষ।
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। পানি বৃদ্ধিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
এ দিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর ও পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার ১০-১৫টি চর এলাকায় পানি উঠতে পারে বলে জানা গেছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, এখন পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তার নিম্নাঞ্চলের যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে সেই সব এলাকার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং ত্রাণ ও সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী, পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম ও নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় প্রায় ২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বেশ কিছু স্থানে তিস্তার বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ছোটখাতা এলাকার মাজেদুল ইসলাম (২৭) বলেন, বৃষ্টির কারণে বাঁধ ধসে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বাঁধ সংস্কার না করলে ভাঙন আরো বড় আকারে রূপ নিতে পারে।
ছাতুনামা কেল্লাপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম (৪০) বলেন, দুপুরে বাড়ির উঠানে উঠে গেছে। আর একটু পানি বাড়লেই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে। ১০ নং পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল লতিফ খান বলেন, ঝাড় সিংহেশ্বর ও পূর্ব ছাতনাই মৌজার ৬টি ওয়ার্ডের প্রায় ১৩০০ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ৭ নং খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: সহিদুজ্জামান সরকার দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, বাইশ পুকুর এলাকায় প্রায় ৪ শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে।
সময় জার্নাল/তানহা আজমী