মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

বাকৃবিতে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ, পুরোদমে চলছে ক্লাস-পরীক্ষা

বুধবার, অক্টোবর ২, ২০২৪
বাকৃবিতে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ, পুরোদমে চলছে ক্লাস-পরীক্ষা

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাবের কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দক্ষতার কারণে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ে সিন্ডিকেট সভা আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকল কার্যক্রম শুরুর পদক্ষেপ নেয়। এদিকে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নতুন উদ্যম।

জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার ও শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতনস্কেলের দাবিতে ১ জুলাই থেকে বাকৃবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জুলাই আবাসিক হলগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। সবকিছু কাটিয়ে  দীর্ঘ ২ মাস পর ১লা সেপ্টেম্বর থেকে বাকৃবিতে আবারও শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপে একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, দ্রুততম সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তখন শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুততম সময়ে মেনে নেয়। ক্লাসের পরে এখন পরীক্ষাগুলোও শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। ক্লাস টেস্ট পরীক্ষাগুলোও প্রতিনিয়ত চলছে। দীর্ঘদিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় সেশনজটের বড় আশঙ্কা কাজ করছিলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তবে এই ভয় কাটাতে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত সময়ে সেমিস্টার শেষ করার উদ্যোগও নিয়েছে কিছু কিছু অনুষদ। শিক্ষার্থীদের মানসিক শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ বড় একটি ভূমিকা পালন করেছে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, নিজেদের তত্ত্বাবধায়নে হলের পরিবেশ ও ডায়নিংয়ের মানোন্নয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। বিশেষ করে মানসম্মত খাবারের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কৃষিবিদ ওয়াহিদা ইয়াসমিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকাকালীন সময়ে আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কিছু কিছু কাজ আগামভাবে করে রেখেছিলাম, যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট না হয়। সেই অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পরই ১ম বর্ষের বাকি থাকা পরীক্ষাগুলো শুরু করা হয়েছে। এর পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হয়েছে। এখন ধারাবাহিকভাবে বাকি বর্ষের পরীক্ষাগুলোও শুরু করা হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, 'শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন শিক্ষা কাকর্যক্রম বন্ধ ছিলো। এর আগে করোনা মহামারীর কারণেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই ক্ষতিগুলো পুষিয়ে নিতেই বাকৃবি প্রশাসন দ্রুততম সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কাজে অনেক প্রতিকূলতাও ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলেই অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছেন বলেই এই প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে দ্রুততম সময়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে সেকারণেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানের পরে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে বাকৃবি। ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক হওয়ায় আমি তখন আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হই। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই সকলকে নিয়ে কাজ শুরু করি। বিশ্ববিদ্যালয় জায়গাটাই হলো পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য। গবেষণা ও পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যেই কাজ করেছি। আমি আশা করছি আগামীকে বাকৃবি আরও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, 'শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলেই এখন ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। মোটামুটি সকল বর্ষেই পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়েছে। সেমিস্টার ফাইনাল, ক্লাস টেস্টসহ সকল পরীক্ষাই চলছে। আমি গত ১৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে আরও অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করছি যাতে করে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো কিছুতেই অপচয় না হয়। আন্দোলনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ক্ষতি হয়েছে সেটি পুষিয়ে নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় আছে কি না সেটি জানার জন্য আমি নিজে হলগুলোও পরিদর্শন করছি। নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি শিক্ষার দিক দিয়ে বাকৃবি হবে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়। 

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল