তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি:
তিতুমীর কলেজে মাদারীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল দিয়ে কমিটি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই কমিটি দিয়েছেন কলেজটির ছাত্রদলের অছাত্র নেতারা। তারা কমিটির উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) একটি প্যাডে ৯ জনকে উপদেষ্টা রেখে ১৫ সদস্যের একটি আংশিক কমিটি দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, জেলা কল্যাণে নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে দলীয় ছেলেদের দিয়ে এই কমিটি দেয়া হয়েছে। কমিটিতে থাকা সদস্যরা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও রয়েছেন কমিটিতে যারা এখন ছাত্রদলের ছত্রছায়ায় রয়েছেন।
জেলা কল্যাণের ৯ উপদেষ্টার মধ্যে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সহ সভাপতি আল-আমীন মাদবর, রাকিব হোসন, জসিম রানা ও শফিউল্লাহ ইসলাম শফিক। তারা ২০১১-১২ সেশনের আগের তিতুমীর কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এছাড়া ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেন জহিরুল ইসলাম জহির, আবু বকর, মোজাম্মেল হোসেন ও রহমত হোসেন। তারা ২০১৪-১৫ সেশনের আগে তিতুমীরে ভর্তি হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি করা হয়েছে ক্যাম্পাস ছাত্রদলের সহ সম্পাদক মাহতিম অহিদুলকে। তিনি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া মাদারীপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক আবু রুবায়েতকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগ কর্মী আর এস রাজিবকে সহ সভাপতি করা হয়েছে। যদিও রাজিব এখন ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলের সঙ্গে রাজনীতি করছেন। রাজিবের ভাই শরিফ বেপারী মাদারীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে আবু সাঈদকে। তিনি আগে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক আধিপত্যের কারণে চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একাধিক শিক্ষার্থী। কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি রাসেল মাঝি বলেন, উপদেষ্টারা নিজেদের মতো করে কমিটি দিয়েছে। কমিটিতে ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে আসাদের কেউ রাখা হয়েছে। উপদেষ্টারা নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে জুনিয়র ছেলেকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করেছে। এই কমিটি ছাত্রদের কল্যাণের হতে পারে না। সাবিথ সাব্বির নামের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রদের কল্যাণের জন্য জেলা কল্যাণ পরিষদ হওয়ার কথা। কিন্তু এই কমিটিতে রাজনৈতিক বলয় তৈরি করা হয়েছে। উপদেষ্টা সবাই ছাত্রদল করে। তারা কিভাবে নিরপেক্ষ কমিটি দিবে। এই কমিটি অগ্রহণযোগ্য। ছাত্রলীগেও আগে জেলা কল্যাণে এভাবে প্রস্তাব বিস্তার করেছে। জাহিদ হাসান বলেন, ছাত্রদলের অধীনে এই কমিটি হয়েছে। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নেই বললেই চলে। আমি চেয়েছিলাম মিলেমিশে একটা ভালো কমিটি হোক। যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা থাকবে। কিন্তু এখানে তা হয়নি।
সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুল রহমান দোলন এমদাদ বলেন, জেলা কমিটিতে ছাত্রদলের প্রভাব নেই। ব্যক্তিগতভাবে কেউ প্রভাব বিস্তার করলে সেই দায় তার, সংগঠন এই দায় নিবে না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী কমিটিতে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদকে কেউ সাপোর্ট করতে পারে না।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, ছাত্রকল্যাণের জেলা কমিটিতে ছাত্রদলের কারো হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। আমরা এটি সমর্থন করি না।
এমআই