আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মিল্টন। উপকূল থেকে ধেয়ে আসা এই ঝড়ে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে ঝড়টি অরল্যান্ডো শহরের প্রায় ৭৫ মাইল দক্ষিণ দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে।
বর্তমানে ঘণ্টায় ১০৫ মাইল বেগে অগ্রসর হচ্ছে মিল্টন। ঝড়টির মাত্রা দুই দফায় কমিয়ে পাঁচ থেকে ক্যাটাগরি-২ এ নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও এর আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, তীব্রতা কমে যাওয়া সত্ত্বেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আটলান্টিক অতিক্রম করার আগে মিল্টন স্থলভাগে শক্তিশালী তাণ্ডব চালাতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটি ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এতে বহু প্রাণ বিপন্ন হতে পারে বলেও সতর্কতবার্তা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫ মাইল। সে তুলনায় এখন বেগ কিছুটা কমেছে।
এ ঝড়ের ফলে ভারী বর্ষণ এবং বন্যার কবলে পড়তে পারে অঞ্চলটি। এখনও প্রবল বেগে বাতাস বইছে ফ্লোরিডা রাজ্যে। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত হচ্ছে সেখানের মানুষ। ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এর আগে ঝড়টি ক্যাটাগরি-৩ এ অবস্থান করছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানায়, ফ্লোরিডার পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের জন্য সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হারিকেনের রেকর্ড গড়তে পারে মিল্টন।
ভয়েস অফ আমেরিকার এক খবরে বলা হয়েছে, ঝড়ের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের অংশ হলো জলোচ্ছ্বাস। মূলত ঝড়ের শক্তিশালী বাতাসের কারণে পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র জানায়, যেসব এলাকায় ঝড়ের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি সেখানে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ৩ থেকে ৪ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে ফ্লোরিডার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, এখনই সবাই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন। হোয়াইট হাউস জানায়, মিল্টনের প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া তদারকির জন্য প্রেসিডেন্ট চলতি সপ্তাহে জার্মানি ও অ্যাঙ্গোলায় সফর বাতিল করেছেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৬০ কিলোমিটার, যা এটিকে সাফির-সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি ৫ ঝড়ে পরিণত করেছে। এই মাত্রার ঝড়ের ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ঘড়বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এবং দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজ্যটির গভর্নর রন ডিসান্টিস দুই দিন আগেই সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছিলেন, মিল্টনের আঘাত সম্ভবত অত্যন্ত ভয়াবহ হবে। তিনি স্থানীয়দের সরে যাওয়ার এবং নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।
সময় জার্নাল/এলআর