নিজস্ব প্রতিনিধি:
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে দুই মাস পেরিয়ে গেল। গণ-অভ্যুত্থানের আগে দীর্ঘ ১৭ বছর নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কিন্তু এই পরিবর্তিত সময়ে রাজনীতি করতে গিয়ে নানা বিশৃঙ্খলা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে দলটির কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতারা।
তবে, এসব বিষয়ে খুবই কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা যাচ্ছে বিএনপির নীতি নির্ধারকদের। যখন যে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে সঙ্গে-সঙ্গে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দলের নেতাদের অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে বিএনপিতে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁদাবাজি, দখল, হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও দখল, বিতর্কিত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে এবং দলের নীতি ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে সারা দেশে বিএনপির ২ শতাধিক নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ছাত্রদল-যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সূত্র বলছে, চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং নিজেদের মধ্যে খুনাখুনিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে এই তিন সংগঠনের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কাউকে-কাউকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে মামলাও করা হয়েছে। যেমন চাঁদাবাজিসহ দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে রাজধানীর কলাবাগান থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) ওবায়দুল ইসলাম সৈকতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৩ জন নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫২৩ জনকে কারণ দর্শানোর নেটিশ, ৪৩৭ জনকে বহিষ্কার, ২৪ জনের পদ স্থগিত, ৩৫ জনকে সতর্ক এবং ৪ জনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দলটির কেন্দ্রীয় প্রায় ১৫ জনের মতো নেতার বিরুদ্ধে দলের নীতি-আদর্শ এবং শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এসেছে, তাদের পদ স্থগিত করা হয়েছে। আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অপেক্ষাকৃত হালকা তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দলীয় নীতি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে সঙ্গে-সঙ্গে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোথাও-কোথাও মামলা পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে।’
সময় জার্নাল/তানহা আজমী