মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, সাতক্ষীরায় পূজার সার্বিক পরিস্থিতি খুবই ভাল। এখানে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমি দেখেছি এবং দূর্গোৎসবকে সফল করার জন্য সকলের মধ্যে যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক, যে ভাবে সবাই এক হয়ে কাজ করছে এটা আমাকে খুবই অভিভূত করেছে।
তিনি বলেন, আমার সাতক্ষীরা সফরের উদ্দেশ্যে ছিল মূলতঃ শারদীয় দুর্গা উৎস্যবকে ঘিরে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবকে সফল করতে আমরা যে ব্যবস্থা নিয়েছি, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং সেটি কিভাবে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কতটুকু বাস্তবায়ন করছে সেটি দেখার জন্য। আমিসহ আমাদের বাকি উপদেষ্টারাও সারা দেশে সফর করছেন। তরাই অংশ হিসাবে অমি এখানে এসেছি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আমার সাতক্ষীরায় আসার আরো একটি বড় কারণ হলো শ্যামনগরের ঘটনা। আমি গিয়ে সেখানে গিয়ে যেটা দেখেছি, সেখানকার মন্দিরের যে সভাপতি আছেন তিনি নিজেই বলেছেন, সেখানে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের গাফিলতি ছিল। দরজা বন্ধ না করেই চলে গেছিল। ফলে সখোন ঢুকে মুকুট চুরির ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পাওয়া গেছে। থানায় মামলা হয়েছে এবং সন্দিগ্ধ হিসাবে চারজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাকে সিসিটিভি ফুটেজ
দেখা গেছে তাকে সনাক্ত করার চেষ্ট চলছে। এখনো পর্যন্ত সেখানকার স্থানীয় কেউ ছবি দেখে তাকে সনাক্ত করতে পারেনি। সন্দেহ করা হচ্ছে সে বাইরের কোথা থেকে এেসেছে। প্রয়োজনে জাতীয় দৈনিকে তার ছবি দিয়েও তাকে সনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে।
সাতক্ষীরায় দুই দিনের সফর শেষে শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার রাস্তায় খুবই খারাপ। সড়ক পথে সুন্দরবন ভ্রমণ করে খুব কষ্ট হয়ে গেছে। এটির উন্নয়ন খুবই দ্রæত প্রয়োজন। গত ১৫ বছর ধরে উন্নয়ন গেলানো হয়েছে, যেটা খুব নির্দিষ্ট কিছু জায়গায়। যার বাড়ি যেখানে এভাবেই আসলে উন্নয়নটা হয়েছে। যেমন গোপালগঞ্জ উন্নত হয়েছে কিন্তু তার আশেপাশের জেলাগুলোর অবস্থা খারাপ। এখানকার রাস্তাগুলো আমি দেখেছি এবং এ রাস্তাগুলো দিয়েই আমি যাতায়াত করেছি। আমি বাই রোডেই এসেছি। অবস্থা খুবই খারাপ এবং এটার উন্নয়ন প্রয়োজন। আমি অবশ্যই সড়ক ও মহাসড়ক পরিবহন বিভাগের উপদেষ্টার সাথে এ বিষয়ে কথা বলব।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জন্য এটা অনেক বড় পরিবর্তন। আমরাও শেখার চেষ্টা করছি, এই নতুন পরিবর্তন থেকে। আসলে আন্দোলন করতে করতে আন্দোলনের একটা অভ্যস্ততা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ ছয় বছরই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এক্টিভিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। কিন্তু এখন প্রশাসনের জায়গা থেকে, সরকারের জায়গা থেকে, দায়িত্বের জায়গা থেকে এটাকে লান্ড করা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি অভিজ্ঞতা। একই সাথে শিখছি এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সৌম্য-মোস্তাফিজ, সাবিনা-মাসুরার মতো খেলোয়াড়দের জেলায় জিমনেসিয়াম নেই। স্টেডিয়ামের অবস্থাও খুবই নাজুক।
এটি খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সাতক্ষীরায় জিমনেসিয়ামসহ যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সার্ভে করে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো। স্টেডিয়ামের সংস্কারে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেসব খেলা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করার সুযোগ আছে সেখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি দেওয়া হবে। এছাড়া যেসব অঞ্চল থেকে খেলোয়াড় উঠে আসছে সেসব এলাকায় বেশি নজর দেওয়া হবে। অনেক জেলায় টুর্নামেন্ট হয় না অনেক বছর। আগের সরকারের আমলে জবাবদিহীতা ছিলো না। জবাবদিহীতা নিশ্চিত করবো এবং টুর্নামেন্টের আয়োজন করবো।
তিনি আরও বলেন, সব জায়গায় সংস্কার চলছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ডিএফএসর কমিটিতে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুবই দ্রæত আমাদের কার্যক্রম শুরু হবে। সবকিছু সংস্কার করতে আমাদের দেরী হচ্ছে। আমরা যা পেয়েছি আওয়ামী লীগ সরকার থেকে পেয়েছি। শুধু মাথাগুলো পরিবর্তন হয়েছে, সিস্টেম পরিবর্তন হয়নি। রাতারাতি সিস্টেম পরিবর্তন সম্ভব না। সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে সিস্টেমের পরিবর্তন করা হবে। তারপর আমরা ভালো ফলাফল পাবো।
এমআই