আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের ‘প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ইব্রাহিম রাইসি। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পরাজিত প্রার্থীরা। শনিবার তার বিজয়ের খবর প্রকাশ করে তেহরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। দেশটির রাজনীতিতে তার পরিচয় একজন কট্টরপন্থী নেতা হিসেবে। বিচারপতি থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তিনি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাইসি ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান এবং তার মতাদর্শ অতি রক্ষণশীল। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং অতীতে রাজনৈতিক বন্দিদের মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ছিল। তবে সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রাষ্ট্রীয় বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।
৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। তাকে ২০১৯ সালে বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর দুবছর আগে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি হাসান রুহানির কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হন।
১৯৮০ এর দশকে রাজনৈতিক বন্দিদের যেভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাতে রাইসির ভূমিকা নিয়ে বহু ইরানি এবং মানবাধিকার কর্মী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইরান কখনো এই গণ মৃত্যুদণ্ডের কথা স্বীকার করেনি। রাইসির ভূমিকা নিয়ে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কখনো কিছু বলেননি।
মনে করা হচ্ছে, রাইসির অধীনে কট্টরপন্থীরা ইসলামি অনুশাসন মেনে সরকার পরিচালনার ব্যাপারে আরও কঠোর হবেন। যার অর্থ সামাজিক কার্যক্রমের ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ, নারীদের কর্মসংস্থান ও স্বাধীনতা কমে যাওয়া এবং সংবাদমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি ও রাইসির জন্ম একই স্থানে; দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে। খামেনির মতো না হলেও দেশটির সংখ্যাগুরু শিয়া সম্প্রদায়ের কট্টরপন্থিমহলে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক।
কট্টরপন্থীরা পশ্চিমাদের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করলেও রাইসি এবং সর্বোচ্চ নেতা খামেনি উভয়েই পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে ফিরে যেতে আগ্রহী বলে ধারণা করা হয়।
গত শুক্রবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ কোটি ৯ লাখ ভোটারের মধ্যে এ নির্বাচনে ২ কোটি ৮ লাখ ভোটার তাদের ভোট দেন। রাইসি ১ কোটি ৭ লাখ ৮০ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রেজায়ী পেয়েছেন ৩৩ লাখ ভোট। আর আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী হিম্মতি পেয়েছেন মাত্র ২৪ লাখ ভোট।
এর আগে বিভিন্ন জরিপে ইব্রাহিম রাইসিই এগিয়ে ছিলেন। কারণ আহমেদিনিজাদের মতো শক্তিশালী প্রার্থীরা আগেই প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।
সময় জার্নাল/আইইউ