সাইদ আহম্মদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং দেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন ধরনের দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শেকৃবি ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর একটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস এবং সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবির। স্মারকলিপিতে বিচারিক বিষয়ে ৩ টি, প্রশাসন সংস্কারে ১৫ টি, একাডেমিক সংস্কারে ১৩ টি, স্বাস্থ্য বিষয়ে ৫ টি সহ মোট ৩৮ টি দাবি উল্লেখ করেন।
বিচারিক বিষয়ে দাবি সমূহ হলো, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ইন্ধনদাতাশিক্ষার্থী, কর্মচারী, কর্মকর্তা এবং শিক্ষকবৃন্দদেরকে বিচার, স্বৈরাচারের আমলে সকল অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের অনিয়মের তদন্ত এবং মাড়িয়াকে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী এবং জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের সাপেক্ষে দ্রুত বিচার।
প্রশাসনিক সংস্কারে দাবি সমূহ হলো, স্বৈরাচারের শাসনামলে বৈষম্যের শিকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যথাযথ মূল্যায়ন, সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃক হল এবং অন্যান্য ভবনসমূহের প্রস্তাবিত নামগুলো সিন্ডিকেট মিটিংয়ে দ্রুততম সময়ে পাশ ও নতুন আইডি কার্ড প্রদান, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাণিজ্য মেলার মাঠকে গবেষণা মাঠ হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরন, পুরো ক্যাম্পাস ফ্রি ইন্টারনেট সেবা প্রদান, ঐতিহ্যবাহী "কৃষি টাউয়ার" অনুরূপ টাওয়ার স্থাপন, মেয়েদের আবাসিক হল গুলো রাত্রে শীতে ৯:০০ পিএম এবং গ্রীষ্মকালে: ১০:০০ পিএম পর্যন্ত খোলা রাখা, ক্যাম্পাসে মুক্তমঞ্চ এবং ফুড কর্ণার স্থাপন, টিএসসি সার্বক্ষণিক খোলা রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয় অনুমদিত সকল সংগঠনের কার্যালয় বরাদ্দ দেওয়া, হলসমূহে নিয়মিত খাবারের মান মনিটরিং করা, হলগুলোর ডাইনিং-এ ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা, জিমনেসিয়ামের আধুনিকায়ন করা এবং নিয়মিত খোলা রাখা, খেলার মাঠের আধুনিকায়ন করা এবং খেলাধুলার উপর পর্যাপ্ত বরাদ্দ বাড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে ছাত্রপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, স্টিকার বিহীন গাড়ি ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে চলাচল বন্ধ করা এবং অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ এবং বহিরাগতদের প্রবেশ সীমিত করা।
একাডেমিক সংস্কারে দাবি সমূহ হলো, কোর্সকারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন, অত্যাধুনিক ল্যাব ফ্যাসালিটিস এবং বিশ্ব মানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করা, মান্ধাতা আমলের ল্যাবখাতা বাদ দিয়ে আধুনিক উপায়ে ব্যাবহারিক কোর্স প্লান করা, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ব্যবহারিক কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করা একাডেমিক ভবনগুলোতে আধুনিক ক্লাসরুম, কমনরুম এবং পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসম্মত সৌচাগারের ব্যবস্থা করা, প্রতি সেমিস্টারে প্রদত্ত বৃত্তির টাকার পরিমাণ সময়ের সাপেক্ষে বাড়ানো,এগ্রিকালচার, এগ্রি ইকোনমিকস, ফিসারিজ ফ্যাকাল্টির জন্যও ইন্টার্নিশিপ চালু করা, শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অনুমদিত সকল ধরনের ফিল্ড ট্যুর এবং সার্ক ট্যুর দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু করা, সকল ফ্যাকাল্টির জন্য ক্যারি অন চালু করা, নিয়মিত জব ফেয়ার এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেমিনারের ব্যাবস্থা করা, নিয়মিত সমাবর্তনের ব্যবস্থা করা, মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হল সমূহে সিট বরাদ্দের ব্যবস্থা করা, পূণরায় সাংস্কৃতিক সপ্তাহ চালু করা।
স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার সমূহ হলো, হলগুলোতে এবং ক্যাম্পাসে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম এবং মশা নিধন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা, মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করে ২৪ ঘন্টা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদেরকে চিকিৎসা ভাতা দেওয়া, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধের ব্যবস্থা করা, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কাউন্সিলিং এর জন্য ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আমি স্মারকলিপি পেয়েছি। ইতিবাচক ক্যাম্পাস গড়তে আমরা এটি নিয়ে কাজ করব।
সময় জার্নাল/এলআর