মোঃআশিক মিয়া,চবি প্রতিনিধিঃ
কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে গণহত্যার সমর্থন দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করায় পরীক্ষা বর্জন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) বাংলা বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২০ আক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি ১ম বর্ষের ১০১ নাম্বার কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষায় উপস্থিত হলে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে যায় তার সহপাঠীরা। এ সময় বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান নেয় তারা। এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে গণহত্যাকারীদের পক্ষে এবং আন্দোলনের বিপক্ষে সে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে গণহত্যাকারীদের দোসর হিসেবে কাজ করে। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে তার সহপাঠীরা এ বিষয়ে তাকে বললে তার মাঝে কোনো অনুশোচনা লক্ষ্য করা যায়না বরং সে কোনো অন্যায় করেনি বলে জানায়। এরই প্রেক্ষিতে বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলা বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী রনি হাসান বরাত বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুাত্থানে আমাদের আনেক সহপাঠী ও ভাই প্রাণ হারিয়েছে। সেই গণ-হত্যকারীদের পক্ষে দোসর হিসেবে কাজ করছিল জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি যাকে আমরা ডিপার্টমেন্ট থেকে বয়কট করেছিলাম। পরীক্ষা হলে তাকে দেখলে আমরা পরীক্ষা বয়কট করে হল থেকে বের হয়ে আসি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি শুরু থেকেই কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলাম। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে টিয়ার গ্যাসে আহত হয়েছি। হাইকোর্ট থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোটার রায় আসলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে না আসায় আমি আন্দোলন থেকে বের হয়ে পড়ি। এরপর আমি একটা পোস্ট করি- 'কোটার পক্ষে ছিলাম, কিন্তু এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার পক্ষে নাই'। এই পোস্টের কারণেই আমাকে বিভাগ থেকে বয়কট করে। আজ আমি পরীক্ষা দিতে যাওয়ায় আমার সহপাঠীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়। আমি পরীক্ষা দিতে চাই। আমি তো কোন ক্রাইম করিনি। শিক্ষকদের কাছে আমি সবকিছু বলেছি। তারা আমাকে যথেষ্ট কো-অপারেট করেছে। যা করেছে আমার সহপাঠীরা করেছে। বিভাগ থেকে লিখিত আকারে যদি আমাকে পরীক্ষা দিতে না বলে, সেটা আমি গ্রহণ করবো এবং পরে একশন নেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম বলেন, মুন্নি পরীক্ষা দিতে আসায় তার সহপাঠীরা পরীক্ষা দেয়নি। তারা প্রক্টর অফিসে এ সম্পর্কে একটা লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছে। আমরা আগামী পরশুদিন (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
সময় জার্নাল/তানহা আজমী