জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সুজনের কুটি গ্রামে সমতলে ভারতের দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের কমলা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন চাষী আবু বক্কর সিদ্দিক । শীতের শুরুতেই বাগানের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের স্বপ্ন দোল খাচ্ছে এ সব কমলা গাছে।বাগানের সারিবদ্ধ গাছ আর এ সব গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ রংয়ের কমলা।
এই জাতের কমলা রসালো সুমিষ্টি এবং ভালো ফলন দেখে কমলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে অনেক কৃষকের। বাংলাদেশের বিরাজমান আবহাওয়ায় সমতলে উন্নত জাতের এ কমলার আশাতীত ফলনে কৃষি অর্থনীতিতে বিপুল সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
কৃষক আবু বকর সিদ্দিক জানান, বাপ দাদার আমল থেকে শুনে আসতেছি আমাদের এই অঞ্চলের মাটিতে নাকি কমলা চাষ হবে না,
২০২০ সালে ইউটিউব দেখে কমলা চাষ পদ্ধতি জানতে পারেন আবু বকর সিদ্দিক।পরবর্তিতে নিজ উদ্যোগে ২৮ শতাংশ জমিতে ছেলের মাধ্যমে যশোরের মহেশপুর থেকে কমলার চারা এনে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগানে ১৩০টি গাছে কমলা ধরেছে এবং কয়েক শত চারা গাছ বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।এক একটি চারা ৩০০/৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কমলাগুলো বড় আর মিষ্টি ও সুস্বাদু।
দার্জিলিং সাদকি ম্যান্ডারিং কমলা চাষের সব মিলিয়ে দেড় লাখ টাকার মত ব্যয় হলে ও প্রতি বছরে দুই থেকে তিন লাখ টাকা আয় হচ্ছে।তা দেখে কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছে স্থানীয় কৃষক।
তিনি আরো জানান,নিয়মিত পরিচর্যা করে চার বছর পর দ্বিতীয় বার আমার কমলা বাগানে প্রচুর কমলা ধরেছে । আমার এই কমলার বাগান দেখতে দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থী ও কৃষকরা আসছেন। আমার কাছে কমলা গাছের চাড়াসহ ক্রয় করে চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন। তবে আমার মত কৃষক কে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনা দিলে এই অঞ্চলে কমলা চাষের ব্যাপক প্রসার ঘটানো যাবে।কমলার বাগান দেখতে এবং চারা সংগ্রহ করেতে প্রতিদিন আসছে শত শত দর্শনার্থীরা।
কমলার বাগান দেখতে আসা নজির হোসেন জানান, আমি এতদিন মানষের মুখে মুখে শুনেছি আজ বাস্তবে দেখলাম।আমি কমলা বাগান দেখতে এসে অবাক হয়ে গেছি। ফুলবাড়ীতে এত ভালো কমলা চাষ হয়েছে, কমলা দেখতে বড় বড় খেতেও মিষ্টি ও সুস্বাদু, কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমাণ করলো এ অঞ্চলের মাটি ও কমলা চাষের উপযোগী।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন জানান, আমরা ইতিমধ্যে কমলা বাগানটি ঘুরে দেখেছি, ফুলবাড়ীতে আবু বক্কর সিদ্দিক নামের এই কৃষক কমলা চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। কমলা চাষে কৃষি অফিস ওই কৃষককে পরামর্শ দিতে সদা প্রস্তত।
সময় জার্নাল/এলআর