জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি:
মানসিক নির্যাতন ও হিজাব নিয়ে কটুক্তি সহ নানা অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র সূতারকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকাল ৪ টার দিকে একাডেমিক কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর আগে আজ দুপুর আড়াইটার দিকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন একাডেমিক ভবনে অধ্যাপক সুভাষকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা, 'এক দফা এক দাবি, সুভাষের চাকরিচ্যুতি', 'সুভাষের চামচারা, হুশিয়ার সাবধান', 'চারুকলায় তেলবাজি চলবে না চলবে না', ' সুভাষের দুই গালে, জুতাম মারো তালে তালে', ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করা, চলবে না চলবে না', 'হৈ হৈ রৈ রৈ, তামা সুভাষ গেলো কই' ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।
অধ্যাপক সুভাষের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী রুবাইয়া ফাহমিদ বলেন, আমি বোরকা পরতাম বলে তিমি ফাইনাল, ইনকোর্সের কোনো কাজই দেখেন না, আমরা কাজ গুলো করে সঠিক মুল্যায়ন পাইনা। মতের অমিল হলেই হেয় করেন। উনি প্রায়ই বলেন বোরকা পরলে চারুকলায় তার পড়ার যোগ্যতা নেই। অনেক সময় গালিগালাজও করেছেন আমি ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এসেছি। তাহলে একজন শিক্ষক এমন কথা কেন বলবেন! এখন অবস্থা এমন যে উনাকে দেখলে আমি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে যাই।
বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাফিন চৌধুরী বলেন, আমি ফ্রিল্যান্সিং করি বলে তিনি প্রায়ই আমাকে বলে তোর তো টাকার লোভ, তোর পড়ালেখা হবে না। আমাকে নামাজ পড়তে দেখে উনি বলতেন নামাজ পড়ে কোনো লাভ হবে না বরং একাডেমিক ফলাফলে বাজে প্রভাব পড়বে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জরুরি একাডেমিক সভার আহবান করেন চারুকলা অনুষদের ডিন এবং গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী।
সভা শেষে তিনি বলেন, বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করে। যার প্রেক্ষিতে আজ দুপুরে বিভাগের একাডেমিক কমিটির ৩১তম জরুরি সভা আহ্বান করি। সভায় অভিযোগের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। সেখানে বিভাগের শিক্ষকদের প্রায় দুই ঘন্টা আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র সূতারকে বিভাগের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে কতৃপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এমআই