স্পোর্টস ডেস্ক:
দেশের মাটিতে খেলে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারেননি সাকিব আল হাসানের। ফলে হয়তো কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই হয়ে রইল সাদা জার্সিতে সাকিবের শেষ ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলে বিদায় বলতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে দেশের আর ফেরা হয়নি।
সাকিব এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতেই নিজের খেলার দরজা খোলা রেখেছেন। এই ফরম্যাটে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ইতি টানবেন বলে জানিয়েছেন। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে বাংলাদেশ নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মাত্র ৬টি ওয়ানডে খেলবে, যেখানে সাকিবের দলে থাকা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
আগামী ৬ নভেম্বর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজেই প্রশ্ন উঠেছে সাকিব বাংলাদেশ দলে থাকবেন তো? আজ বোর্ড মিটিং শেষে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলে সাকিব ইস্যুতে নানা প্রশ্ন উঠে আসে।
সম্প্রতি জনপ্রিয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে সাকিব আফগান সিরজ খেলা নিয়ে বলেছেন, ‘আমি কীভাবে বলবো, বিসিবি ভালো বলতে পারবে এ ব্যাপারে।’ সাকিবের উত্তরে অনেকটাই পরিষ্কার আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে তিনি খেলতে চাইলেও ব্যাপারটা এখন আর তার হাতে নেই। মিরপুরে বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সাকিবের ব্যাপারটা… যেহেতু এখনো দল ঘোষণা হয় নাই, তার মানে সে অ্যাভেইলেবল আছে।’
এরপর বিসিবি সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি একজন সাবেক অধিনায়ক, সাকিবও সাবেক অধিনায়ক। সে ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিল। শেষ টেস্ট কেন খেলতে পারল না? সে আরব আমিরাতে ওয়ানডে সিরিজে খেলতে চায়…। প্রশ্ন শুনেই বেজায় চটে যান ফারুক। পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘সে খেলতে চায়?’ সাংবাদিক তখন বলেন, ‘আগ্রহ আছে।’
এরপর গণমাধ্যমকে বিসিবি সভাপতি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপনাকে বলেছে পারসোনালি?’ প্রশ্নকর্তা তখন জবাব দেন, ‘তিনি বলেছেন, বোর্ড চাইলে খেলতে রাজি আছেন।’ এরপর পুরো বিষয়টি নিয়ে লম্বা জবাব দেন ফারুক আহমেদ, ‘আপনি বলেছেন, তার লাস্ট টেস্ট আমরা খেলতে দেইনি। আমরা কোনোভাবেই জড়িত নই ব্যাপারটায়। এটা হলো গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার এবং সাকিব আল হাসান….।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে পুরোপুরি অক্সিলারি পার্ট নেওয়ার কথা ছিল। যত কথাই বলেন, আমি বলি, আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যাতে সাকিব আল হাসান দেশের মাটিতে বিদায় নিতে পারে। আমার চেষ্টা আমি করেছি। কিন্তু সাকিব আল হাসান শুধু একজন ক্রিকেটার নয়, তার আরেকটি পরিচয় আছে। সে গত সরকারের এমপি ছিলেন। কিছু সেন্টিমেন্ট আছে। সব মিলিয়ে সরকারের দৃষ্টিকোণ আর বিসিবির দৃষ্টিকোণ এক না।’
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমি একজন ক্রিকেটার হিসেবে চিন্তা করেছি যে, সে ১৬-১৭ বছর ক্রিকেট খেলেছে, দেশের জন্য অনেক অবদান, সে আমাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডার, তাই দেশে বিদায় নিতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু সঙ্গে বাকি জিনিসগুলো দেখতে হবে। সব মিলিয়ে সে শেষ মুহূর্তে সে আসতে পারে নাই। এটা আইনগত একটা বিষয়। এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত আছে। সাকিব আল হাসান আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয় ছিল, বোর্ড জড়িত ছিল না। বোর্ডের পক্ষ থেকে আমাদের যতটা সম্ভব ততটা নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করতাম।’
এমআই