শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরে রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তি: রাস্তা চায় গ্রামবাসী

বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
ফরিদপুরে রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তি: রাস্তা চায় গ্রামবাসী

এহসান রানা,ফরিদপুরঃ 

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম সোনাডাঙ্গী। দুই যুগ আগে বসতি স্থাপন হলেও গ্রামে মাত্র দুই শতাধিক লোকের বসবাস। মাত্র ১শ মিটার রাস্তার জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামের ছোট-বড় সবাই। শুধু সোনাডাঙ্গী নয় আশপাশের আরো কয়েক গ্রামের মানুষের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে ঐ ১শ মিটার রাস্তা। সামান্য একটু রাস্তার দাবি করেছে শিশু থেকে বৃদ্ধ, মহিলা পুরুষ সবাই। গ্রামের মধ্য দিয়ে পায়ে হাঁটার রাস্তা থাকলেও গ্রাম থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। তবে ঐ ১শ মিটার রাস্তা হলেই গ্রামবাসী হাফ ছেড়ে বাঁচে।

সরেজমিনে কাঁদা-মাটি মাড়িয়ে সোনাডাঙ্গী গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা যায় নতুন একটি মসজিদ। সেখানেই গ্রামবাসীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, মসজিদে ৫ ওয়াক্ত আজান ও নামাজ হয়, রয়েছেন একজন ঈমামও। শতভাগ বিদ্যুতায়িত গ্রামে প্রায়  অর্ধশত পরিবারে ভোটার সংখ্যা শতাধিক। রয়েছে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী যারা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি। গ্রামের সবাই মুসলিম ধর্মের অনুসারী। আলো-বাতাস, চারিদিকে ছায়া, সবুজ একদম ছবির মত গ্রাম। সহজ সরল এই মানুষের কাছে গ্রামে রাস্তা না থাকাটা যেন একটা দীর্ঘশ্বাস। তবে রাস্তা নির্মানের জন্য কোনভাবেই জমি দিবে না বলে জানিয়েছেন জমির কয়েকজন মালিক।

সকাল হতেই পাখির কলকাকলীতে ঘুম ভাঙ্গে গ্রামবাসীর। শিক্ষার্থীরা মক্তব শেষ করে স্কুল ও মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য তৈরী হয়। বর্ষাকালে পানি আর পাট মৌসুমে শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট সহ্য করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়। তবে ১২ মাসই তাদের কষ্ট থাকে। গ্রামের নারী ও বৃদ্ধদের কষ্ট যেন আরও বেশি। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের রাস্তার চিন্তায় যেন ঘুম হারাম। যদি কোন সমস্যা হয় কিভাবে তারা হাসপাতালে যাবে আর কিভাবেই তারা ফিরে আসবে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে খেতে বৃদ্ধরা আর গ্রাম থেকে বের হতে চায় না।

চারপাশে গাছপালা আর সবুজে ঘেরা গ্রামের কৃষকের কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই। গ্রামের রাস্তা না থাকায় তারা অল্প অল্প করে ১শ মিটার কাঁদা-পানি, কুয়াশা, ফসলের মাঠ পেরিয়ে যায় মুল কাঁচা রাস্তায়, সেখান থেকে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে হয় হাট বাজারে। এই কাজের জন্য অনেক শ্রম ও সময় নষ্ট হয়। আবার পাশের কয়েক গ্রামের কৃষকেরা মাঠ থেকে তাদের ফসল তুলতে খুব বেগ পেতে হয়। কারণ গ্রামের উল্টো পাশে রয়েছে বিশাল ফসলের মাঠ। সেখান থেকে ফসল সংগ্রহ করতে উৎপাদন খরচ ও ঝুকি বেড়ে যায়। মাত্র ১শ মিটার রাস্তার জন্য পুরো কয়েক গ্রামের মানুষের চরম ভোগান্তি।

২০১৯ সালে গ্রামের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে যায় বিদ্যুৎ, ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে গ্রামবাসীর সংখ্যা। আর জোড়ালো হয় রাস্তার দাবি। গ্রামের সবাই শান্ত ও নিরিহ প্রকৃতির লোক। গ্রামে কখনই পুলিশ প্রবেশ করে নাই। রাস্তা না থাকায়  পুলিশের গাড়ি, এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সহ জরুরি সেবার কোন গাড়িই প্রবেশ করতে পারবে না। গাড়ি তো দুরের কথা বাইসাইকেল বা পায়ে হাটার কোন ব্যবস্থা নাই। তাই ৮০ বছরের বৃদ্ধা সেলিনা বেগমসহ গ্রামের বয়স্করা ভিক্ষা সরুপ সবার কাছে রাস্তার দাবি জানিয়েছেন।

এই বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনিসুর রহমান বালী জানান, রাস্তা না থাকায় গ্রামের মানুষের চলাচলের সমস্যার কথা আমরা জানতে পেরেছি।   এখানে সরকারি কোন হালট না থাকায়, সরকারিভাবে কোন রাস্তা করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করবো গ্রামবাসিদের সমঝোতায় যদি তারা জমি দিতে চায় সেক্ষেত্রে সরকারিভাবে রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

তানহা আজমী


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল