মুরাদ হোসেন, হাবিপ্রবি দিনাজপুর:
আলোচনা আর স্মৃতিচারণে শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে এখন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়নাদ্বীপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টের পর জায়গাটির স্মৃতিচারণ করতে থাকেন সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
পরে ২রা নভেম্বর হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ 'HSTU Days' এ 'ময়নাদ্বীপ 🏝️' শিরোনামে ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট করা হলে সেখানেও সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ করতে দেখা গেছে।
HSTU Days এর ওই পোস্টে শুরুতেই মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পদ্মা নদীর মাঝি'র মানিকের ময়নার দ্বীপের সঙ্গে তুলনা করে বলা হয়, "ময়নার দ্বীপ’ শুনলেই চোখে ভাসে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝির কথা।
মানিকের ময়নার দ্বীপ মানুষ বসবাসের অনুপযোগী ছিল, যা আমরা রাসুর মুখ থেকে শুনি। কিন্তু হাবিপ্রবির ময়নার দ্বীপে গাছপালা আছে, ছায়া আছে। আড্ডাবাজি আছে, আর আছে নিয়মিত চড়ুইভাতি। এমনই আয়োজনের দেখা মিলতো হরহামেশাই।"
শিক্ষার্থীদের মুখে প্রচলিত সে দ্বীপটি আর নেই। তবে কিভাবে ময়নাদ্বীপের সূচনা হয়েছিল সেটিও জানিয়েছে গ্রুপটি।
ক্যাম্পাসের দক্ষিণ–পশ্চিম কোণে একটি পুকুর। পুকুরের পাশে উঁচুমতো ঢিবি। গাছপালা আর বনজঙ্গলে ঢিবিটির উচ্চতা বোঝা মুশকিল। বোঝাই যায়, কোনো একসময় পুকুর কাটা মাটি একত্রে রাখার কারণে এর জন্ম। আর এই উঁচু জায়গাটিই হয়ে গেছে ময়নার দ্বীপ। জনশ্রুতি ও পত্রপত্রিকা মারফত জানা যায় উঁচু মাটির ধ্বংসাবশেষটি গবেষণাকর্মের জন্য চা বাগান করার পরিকল্পনা থাকলেও পরে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এখানে সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মাঝেমধ্যেই বনভোজন এবং আড্ডার আয়োজন করতেন বলে জানা গেছে। এ জায়গাটির সাথে অনেকের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তবে এ উঁচু ঢিবি থেকে সমতল গবেষণা মাঠে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে ওই জায়গাটির। প্রায় চার বছর আলোচনায় ছিলনা এ জায়গাটি। সম্প্রতি জুনিয়র ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টের মধ্যে দিয়ে উঠে আসে ময়নাদ্বীপের কথা।
১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল বারেক বলেন, আমরা মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো পিকনিক আয়োজন করতাম সেখানে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরাই পিকনিক করতো। ছায়াঘেরা,মনোরম পরিবেশে আড্ডা দিতাম। সেদিন ফুরিয়ে গেছে। শুধু স্মৃতির পাতায় জমা রয়েছে সেদিনের কথা গুলো।
সিনিয়র ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন , বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের স্মৃতির অকপটে রয়ে গেছে শত শত বিষয়, জায়গা, ব্যক্তি। ময়নাদ্বীপও তাই। হয়তো দেখা যাবে, দশ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে খুঁজে পাবোনা পরিচিত মুখ, জায়গা গুলো।
সময় জার্নাল/এলআর