নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু জ্বরে কাতরাচ্ছে মানুষ। ২রা নভেম্বর সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবছর। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ হাজার। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৩১৪ জন মারা গেছেন ডেঙ্গুতে।
এরমধ্যে ঢাকার দক্ষিণ সিটিতে সর্বাধিক ১৪৭ জন মৃত্যুর তালিকায় রয়েছেন। দেশে মোট আক্রান্তের ৪১ শতাংশই এই দুই সিটিতে রয়েছেন। চলতি ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্ক করেছিল।
রাজধানীর দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার ঝুঁকিতে ছিল। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন- নভেম্বর ও ডিসেম্বরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে দেশে।
এদিকে, মশার উপদ্রবে রীতিমতো অতিষ্ঠ ঢাকার দুই সিটির বাসিন্দারা। নতুন দুই সিটিতে প্রশাসক আসার পর নানা উদ্যোগ, অভিযানসহ নিত্যনতুন কার্যপরিচালনা করেও হার মানতে হচ্ছে মশার কাছে।
মশার অত্যাচার থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে পারছে না সংস্থা দু’টি। দিন নেই, রাত নেই, ঘরে কিংবা বাইরে, বাসা কিংবা অফিস সব জায়গাতেই মশার উপদ্রব। শুধু রাত নয়, দিনেও কয়েল জ্বালাতে হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। ওষুধ বা স্প্রে- কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না এর উপদ্রব।
প্রতি বছরই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের ভোগায় ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রোগীর চাপে ঠাঁই নেই অবস্থা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলররা অফিস করছেন না।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দুই সিটি করপোরেশনের সব কাউন্সিলরকে অপসারণ করা হয়। ফলে ভেঙে পড়ে মশক নিধন কার্যক্রম। এরপর থেকে ডেঙ্গু মোকাবিলার সাধারণ কার্যক্রমগুলোও সেভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। আর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে মেয়রের স্থলে প্রশাসক বসিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৪ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৪ জনে। ডেঙ্গুতে একদিনে ১৩০৬ রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৪৭১ জনে। এর মধ্যে উত্তর সিটিতে আক্রান্ত সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৮৭ আর দক্ষিণে ১২ হাজার ৪২৯ জন। যা মোট আক্রান্তের ৪১ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত মৃত ৩১৪ জনের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান রেকর্ড এক হাজার ৭০৫ জন।
সময় জার্নাল/এলআর