নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
ঢাকা, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশ সৌরশক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এর ফলে দেশে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। এই চাহিদা বিবেচনা করে হুয়াওয়ে এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)-এর সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর) যৌথভাবে ইউআইইউ-তে দেশের প্রথম এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস)-যুক্ত সোলার এনার্জি ল্যাব উদ্ভোধন করেছে। অত্যাধুনিক এই ল্যাব নবায়নযোগ্য ও টেকসই জ্বালানি খাতে উন্নত প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুযোগ তৈরি করবে।
আজ ইউআইইউ-এর মাল্টিপারপাজ হলে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনের পর ‘দ্যা রোল অফ স্মার্ট গ্রিড ইন দ্যা ফিউচার পাওয়ার সিস্টেম’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন ইউআইইউ-এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া।
এছাড়া প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফাওজুল কবির খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মাননীয় রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি-এর চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. রেজওয়ান খান ও হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড-এর সিইও প্যান জুনফেং। বাংলাদেশ সরকার, ইউআইইউ, হুয়াওয়ে এবং সিইআর-এর অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, “আমি স্মার্ট গ্রিড নিয়ে কথা বলতে চাই। আমরা বছরের পর বছর ধরে দেখছি যে, বিদ্যুৎ ব্যবহারে আমূল পরিবর্তন এসেছে। তাই, আমরা সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য উৎসের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করছি। এখন আমাদের স্মার্ট গ্রিডের দিকে যেতে হবে, এবং আমরা সে-লক্ষ্যেই কাজ করছি। এছাড়াও আমরা ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেমকেও অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”
ইয়াও ওয়েন বলেন, “ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ইএসএস সিস্টেমযুক্ত প্রথম সোলার ল্যাব উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে তরুণদের ক্ষমতায়নের জন্য বিশেষ এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। আজকের এই উদ্বোধন বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এক মাইলফলক। এই যৌথ উদ্যোগ চীনা প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি ইউআইইউ-এর সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ-এর সাথে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপনের একটি প্রতিফলন।”
প্যান জুনফেং বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি যে, সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এই প্রেক্ষাপটে বলা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হুয়াওয়ে ডিজিটাল পাওয়ার বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজিটাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণে সহায়তা করেছে। এর মাধ্যমে ৪৩৭.৫ মিলিয়ন কিলোওয়াট-আওয়ার নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদিত হয়েছে এবং ২০৭,৮৬৭ টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস হয়েছে, যা ২৮৪,৪৫০টি গাছ লাগানোর সমতুল্য। আমরা বিশ্বাস করি, হুয়াওয়ে ও ইউআইইউ-এর সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ-এর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই সোলার ল্যাবে শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কে শেখার, নিজেদেরকে প্রস্তুত করার ও এই খাতে অবদান রাখার বিশেষ সুযোগ তৈরি করবে।”
হুয়াওয়ে-সিইআর, ইউআইইউ সোলার ল্যাব তরুণ প্রকৌশলী ও পেশাজীবীদের তিন মাসের সার্টিফিকেট কোর্স গ্রহণের সুযোগ প্রদান করবে। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হলে আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। পাঠ্যক্রম ও কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সিইআর-এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
তানহা আজমী