জাবি প্রতিনিধিঃ
জুলাই ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চলছে 'নবীন চোখে গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ' শীর্ষক আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাভার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আশপাশ এলাকায় শহীদদের পিতা'রা তাদের অব্যক্ত আর্তনাদ প্রকাশ করেছেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সাড়ে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আয়োজনে এ আলোচনা সভা শুরু হয়েছে।
আলোচনা সভায় অনুভূতি ব্যক্ত করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ ইয়ামিনের বাবা। তিনি বলেন, অনেক শহীদের রক্ত ও আত্নত্যাগের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। শহিদ হিসেবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি না পাওয়া একজন শহীদের বাবা হিসেবে আমাকে পীড়া দেয়। যদি শহীদ হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে মর্যাদা না পায় তাহলে পরবর্তীতে কেউ দেশের জন্য কেন জীবন দিবে? দেশ প্রেমিকদের সম্মান না করলে দেশপ্রেমিক তৈরি হবে না।
জুলাই ও আগস্টে শহিদ এবং আহতদের চিকিৎসার খরচ পাচ্ছে না। তাদের সহযোগিতা দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানাই। আমার সন্তানের মৃত্যুর দিন বলেছি, আমি বিচার দিয়েছি আল্লাহর কাছে প্রতিদান চাইলে আল্লাহর কাছে চাইবো। এসময় ৭১ এর যুদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা এবং ২৪ এর শহীদদের বিপ্লবী যোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় খেতাব ও স্বীকৃতির দাবি জানান তিনি।
শহিদ আলিফ আহমেদ এর বাবা বলেন, রাতে যখন ঘুমাতে যাই মনে হয় আমার ছেলে বলে, বাবা দেশ এখনো স্বাধীন হয় নাই। আবার যুদ্ধে যেতে হবে। বিতর্কিত লোকদের উপদেষ্টার আসনে বসিয়ে শহিদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করবেন না। শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও আহতদের চিকিৎসার দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে ১০ শ্রেনির ছাত্র ছিলো। আমি আর আমার ছেলে একসাথে আন্দোলন করেছি। আমার ছেলে শহীদ হয়েছেন এতে আমার দুঃখ নাই। কিন্তু যারা আন্দোলনে আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য দাবি জানাই।
৩রা আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লং মার্চ টু ঢাকায় অংশগ্রহণকারী শ্রাবন গাজি শহীদ হোন। তার বাবা বলেন, আমার ছেলে মালোয়েশিয়াতে পড়াশোনা করেছে। জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখে দেশের বাইরে থেকে এসে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। আমি বাবা হয়েও সহ্য করতে পারিনি। আমিও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি।
আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত আছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, পল্লী ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিষ্ট সাইয়েদ আব্দুল্লাহ, উপস্থাপক ও আইনজীবী মানজুর আল মতিন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ শান্ত। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা লাকি, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ লুৎফুল এলাহী এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন রুনু।
এছাড়া উপস্থিত আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান সহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
এমআই