নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের আনাচে কানাচে মেধাবী তরুণদের মনে উঁকি দিচ্ছে উদ্ভাবনী সব ধারণা। স্থানীয় নানা সমস্যা সমাধানে প্রচলিত ব্যবসায়িক ধারার বাইরে গিয়ে কিছু করতে চান তারা। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উপকরণ, ও সুযোগের অভাবে শুরুতেই ঝরে যায় এসব সম্ভবনাময় স্বপ্ন প্রতিশ্রুতিশীল আইডিয়া। এমন মেধাবী তরুণদের সাফল্যের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ‘জেলায় জেলায় স্মার্ট উদ্যোক্তা’ বুটক্যাম্পের আয়োজন করছে গ্রামীণফোনের জিপি এক্সিলারেটর। এ আয়োজনের লক্ষ্য তরুণদের দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ঢাকার সাভারে জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বুটক্যাম্পের ১৭তম আসর। বুটক্যাম্পটিতে প্রায় ৩শ’ জন উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন।
মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণে আগ্রহী তরুণদের দক্ষতা অর্জন, নেটওয়ার্কিং এবং ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে এই বুটক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। দেশব্যাপী ধাপে ধাপে ২০টি অঞ্চলে এই বুটক্যাম্প আয়োজন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গ্রামীণফোনের এ বুটক্যাম্পগুলোতে অংশ নিয়েছেন ৪ হাজার ৫শ’ জন আইডিয়াপ্রেনিউর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশনস বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ (অব.)। এছাড়া গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদসহ স্থানীয় সমাজ সংগঠক, স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা, জিপি এক্সিলারেটর (জিপিএ) সদস্য, সংশ্লিষ্ট শিল্পের বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষকগণ, খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব ও অংশীজনগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন গ্রামীণফোনের জিপি এক্সিলারেটর প্রোগ্রামের লিড মুহাম্মদ সোহেল রানা।
অনুষ্ঠানটি দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। দিনের প্রথম ভাগে ডিজাইন থিংকিং-এর কলাকৌশল অর্থাৎ ডিজাইন থিংকিং কী, এর ধাপগুলো কী কী, প্রোডাক্ট টেস্টিং ও মার্কেট রিসার্চ, ফিন্যান্সিয়াল মডেলিং, ইনভেস্টমেন্টের জন্য পিচ ডেক কিভাবে তৈরি করতে হয়- এই বিষয়গুলোর উপরে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। বুটক্যাম্পের দ্বিতীয় ভাগ বা চূড়ান্ত পর্বে হয় আইডিয়া পিচিং প্রতিযোগিতা; যেখানে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন আইডিয়া উপস্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় সমস্যা সমাধানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদ বলেন, “গ্রামীণফোন চায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়তে যেখানে সবার ডিজিটাল ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনে সারা দেশের মেধাবী তরুণদের স্মার্ট উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠার সুযোগ দিতে এ উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। তরুণ এই উদ্ভাবকরা স্থানীয় সমস্যা সমাধান এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে জাতীয় অগ্রগতিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও অবদান রাখবেন। এর ফলে একদিকে যেমন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী তরুণরা পাচ্ছেন নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ, অন্যদিকে দেশ পাচ্ছে ডিজিটাল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার শক্তি।”
২০১৫ সালে কার্যক্রম চালুর পর থেকে দেশের স্টার্টআপ খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে জিপি এক্সিলারেটর। এটি ৫০টি স্টার্টআপের মাধ্যমে ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। সেইসাথে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখছে জিপি এক্সিলারেটর। অনুষ্ঠানে বিজয়ী দলকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।
এমআই