শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ফরজ আলী। বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ গোবধা গ্রামে। আজ থেকে ২৩ বছর আগে স্ত্রী হাসিনা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। নিজের নাম পরিচয় গোপন করে অন্যত্রে বিয়ে করেন। ওই ঘটনার তদন্তে প্রমানিত হয় ফরজ আলী নিজে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। আদালত ফরজ আলীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করলে আত্নগোপনে চলে যান। কিন্তু বিধিবাম ২৩ বছর পর গত ২০ জুন পুলিশ সেই ফরজ আলীকে গ্রেফতার করেছেন।
আদিতমারী থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে ২৮ জুলাই ওই এলাকার মৃত হোসেন আলীর পুত্র ফরজ আলী তার স্ত্রী হাসিনা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। প্রথমে ভারতে পরে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার এক সীমান্তে অবস্থান গ্রহন করেন। নিজের নাম পরিচয় গোপন করে ওই এলাকায় বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করেন।
এ দিকে তার স্ত্রীর মৃত্যুটি আত্মহত্যা নয়, হত্যাকান্ড তার প্রমাণ পায় পুলিশ। পরে আদালত স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী ফরজ আলীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। কিন্তু ফরজ আলী সবার অজান্তে কুড়িগ্রাম সীমান্তে তিনি নিজেকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে কাটিয়ে দেয় জীবনের ২২/২৩ টি বছর। নতুন করে আবারও বিয়ে, সন্তান, সংসার সবকিছুই শুরু করে দেন। ফরজ আলী হয়তো ভুলেও গিয়েছিলেন, তার কোন স্ত্রী ছিল যাকে সে নির্মমভাবে হত্যা করে আত্নগোপন করে আছে। কিন্তু বিধিবাম আদিতমারী থানা পুলিশ ২৩ বছর আগের টগবগে জওয়ান ফরজ আলীকে বৃদ্ধ অবস্থায় আবিষ্কার করে ফেলেন। গত ২০ জুলাই রাতে তাকে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ওই সীমান্ত থেকে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রেফতার করেন আদিতমারী থানা পুলিশ।
আদিতমারী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, একটি গ্রেফতার অভিযানের মধ্য দিয়ে ২৩ বছর যাবৎ আত্নগোপনে থাকা টগবগে জওয়ান যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বৃদ্ধ ফজর আলীকে গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে ইতি টানা হলো নিশংস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ, চার্জশিট দাখিল, ন্যায় বিচারের জন্য সাক্ষী হাজির করা এবং রায় বাস্তবায়নের জন্য আসামিকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালত সোপর্দ করনের মধ্যদিয়ে পুলিশী কর্মকান্ডের চুড়ান্ত পরিসমাপ্তি ঘটলো। গ্রেফতারকৃত ফরজ আলীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এমআই