নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৬১ জনে। তবে চলতি মাস নভেম্বরের ২৫ দিনেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। যা এ বছর এখন পর্যন্ত একমাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
গত অক্টোবর মাসে মৃত্যু হয়েছিল ১৩৫ জনের। আর নভেম্বরের ২৫ দিনেই মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৪৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুজনই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৩৪ জন। ফলে এ বছর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৭২৫ জনে। গতকাল ২৫ নভেম্বর সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২০৭, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৮২, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩২, খুলনা বিভাগে ১২৬ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৪৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪১ জন, রংপুর বিভাগে ১৬ জন এবং সিলেট বিভাগে একজন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৮৭ হাজার ৭২৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৮০ শতাংশ নারী। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৬১ জনের। এর মধ্যে নারী ৫১ শতাংশ এবং পুরুষ ৪৯ শতাংশ।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮ এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রধানত কিউলেক্স মশা বৃদ্ধির মূল উৎস বদ্ধ জলাধার ও নর্দমা। আর ডেঙ্গু ছড়ানো এডিস মশার উৎস বাসাবাড়িতে নির্মাণাধীন উন্মুক্ত আধার ও পরিষ্কার পানি। এই প্রজননস্থল ও ‘আঁতুড়ঘর’ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলে মশার বংশবৃদ্ধির রাশ টেনে ধরা সম্ভব হতো। এর জন্য অনিবার্যভাবেই দুই সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। অন্যথায় ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ রূপ নিয়ে ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
তানহা আজমী