সময় জার্নাল ডেস্ক:
নামিবিয়ার ক্ষমতাসীন এসডব্লিউএপিও দলের নেত্রী নেতুম্বো নান্দি নাদাইতওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। দায়িত্ব নিলে তিনি হবেন নামিবিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ফল প্রকাশ করে।
নামিবিয়ার গত বুধবারের নির্বাচনে (২৭ নভেম্বর) ক্ষমতাসীন পার্টির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নেতুম্বো নন্দী এনদাইতওয়াহ ভোট শুরুর প্রথমেই তার ভোটটি দেন।
৭২ বছর বয়সী নান্দি নাদাইতওয়া বর্তমানে নাবিবিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর জয়ের মধ্য দিয়ে এসডব্লিউএপিও দলটির ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ আরও বাড়ছে। ১৯৯০ সালে দলটির নেতৃত্বে নামিবিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে স্বাধীন হয়। এর পর ৩৪ বছর ধরে দলটি ক্ষমতায় আছে।
নামিবিয়ার নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুসারে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নান্দি ৫৭ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে হলে প্রার্থীকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট নিশ্চিত করতে হবে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ঘোষণা করার পর নান্দি নাদাইতওয়া বলেন, ‘নামিবিয়ার জনগণ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভোট দিয়েছে।’
১৯৬০-এর দশকে নান্দি যখন এসডব্লিউএপিওতে যোগ দেন, তখন দলটি স্বাধীনতার জন্য লড়ছিল। নামিবিয়ায় গণতান্ত্রিক যুগ শুরু হওয়ার পর নান্দি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অসংখ্য জ্যেষ্ঠ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্বাচনে নান্দির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন পান্দুলেনি ইতুলা। ইন্ডিপেনডেন্ট প্যাট্রিয়টস ফর চেঞ্জ (আইপিসি) দলের এ নেতা নির্বাচনে প্রায় ২৬ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতিয় হয়েছেন।
নামিবিয়ায় আলাদা করে জাতীয় পরিষদেও ভোট হয়েছে। এসডব্লিউএপিও দলটি সেখানেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। জাতীয় পরিষদে ৯৬টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে ৫১টিতে জয়ী হয়েছে দলটি। পরিষদে আইপিসি ২০টি আসনে জয়ী হয়েছে। তারা জাতীয় পরিষদে বিরোধী দল হচ্ছে।
তবে আইপিসি বলেছে, তারা নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাবে। নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে তারা।
গত ২৭ নভেম্বর নামিবিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন চলাকালে বিভিন্ন কারিগরি জটিলতা এবং ব্যালট পেপারের ঘাটতি দেখা দেয়। এমন অবস্থায় কিছু কিছু জায়গায় ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানো হয়। এতে ফল ঘোষণা করতে দেরি হয়ে যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নির্বাচনে এসডব্লিউএপিও-এর এ বিজয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। কারণ, উচ্চ মাত্রার বেকারত্ব এবং অসমতা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছিল। তবে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকার কারণে গ্রামীণ এলাকা এবং বয়স্ক ভোটারদের মধ্যে দলটি শক্ত সমর্থন ধরে রেখেছে।
বিশ্লেষক রাক্কেল আন্দ্রিয়াস বলেন, নান্দি নাদাইতওয়া এসডব্লিউএপিও-এর বিভক্ত হয়ে পড়া বিভিন্ন অংশকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছেন এবং দলের অন্য সদস্যদের মতো তাঁর বিরুদ্ধে দুনৃীতির অভিযোগ নেই।
আন্দ্রিয়াস বলেন, ‘তিনি (নাদাইতওয়া) একজন রাষ্ট্রপ্রধান। আমরা স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে তিনি কোনো না কোনো ধরনের নেতৃত্বে রয়েছেন। পদ্ধতিগত বিষয়গুলো নিয়ে তাঁর বোঝাপড়া আছে।’
তানহা আজমী