মো:মিরাজুল ইসলাম,খুবি প্রতিনিধি:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর শ্রমিকদের আক্রমণ এবং একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা এবং পিস্তলসহ শ্রমিকদের আক্রমণে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২৩তম ব্যাচের ছাত্র ইসলাম মোড়লের সঙ্গে। ইসলাম গোপালগঞ্জ থেকে রাজীব পরিবহনের একটি বাসে আসার সময় সিট সংক্রান্ত বিষয়ে বাসের হেলপারের সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসলাম মোড়ল বলেন, "গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় ফেরার পথে ১৫০ টাকার টিকিট কেটে বাসে উঠি। সুপারভাইজার সিটের প্রতিশ্রুতি দিলেও সিট পাইনি। একপর্যায়ে বাসের হেলপার খারাপ আচরণ করেন এবং আমাকে সোনাডাঙ্গায় নামিয়ে ফোন কেড়ে নেন। সেখানে কয়েকজন শ্রমিক মিলে আমাকে মারধর করেন এবং জামা ছিঁড়ে ফেলেন।"
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে জড়ো হন এবং সড়ক অবরোধ করেন। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের লাঞ্ছনার বিচার দাবি করতে গেলে শ্রমিকরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এতে আশিক, সিয়াম, জিসান আহমেদ, অরূপ বসু, হৃদয়, এবং শাহরিয়ার পারভেজ সাদসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
সংঘর্ষের সময় শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) হাওলাদার সানওয়ার মাসুম বলেন, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা চলছে।"
এদিকে, শ্রমিকদের দাবি, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা দ্রুত অভিযুক্ত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরবর্তী কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তৎপর রয়েছে।
তানহা আজমী