আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় ১২ বছরের সহিংসতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহিংসতায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এত সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু এবং বয়স পাঁচ বছরের নিচে।
নাইজেরিয়ায় সহিংসতা ও এর প্রভাব নিয়ে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) করা জরিপের প্রতিবেদন বৃস্পতিবার (২৪) প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সহিংসতায় যে প্রাণহানি ঘটেছে তা ধারণার চেয়েও ১০ গুণ বেশি।
আল-জাজিরা জানায়, ২০০৯ সালে নাইজেরিয়ার সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারাম এই অঞ্চলে সহিংসতা শুরু করে। তারা সেখানে ২০ লাখ মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়া করেছে এবং বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এতে লাখ লাখ মানুষকে সাহায্য নির্ভর হতে হয়েছে। সহিংসতা শেষ হওয়ার কোনো চিহ্ন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না এখনো।
জাতিসংঘ জানায়, সহিংসতায় নিহত সাড়ে তিন লাখের মধ্যে প্রায় তিন লাখ ২৪ হাজারই ছোট শিশু। অর্থাৎ নিহত প্রতি ১০ জনের নয় জনই ছোট শিশু। প্রতিদিন গড়ে সেখানে ১৭০ জন করে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। সহিংসতায় প্রায় তিন লাখ ১৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন পরোক্ষ কারণে।
সহিংসতার কারণে দেশটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এতে করে কৃষি উৎপাদন ও বাণিজ্য কমেছে। খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিতে পড়েছেন তারা যারা কৃষির ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষ খাদ্য সংকট, স্বাস্থ্যসেবা, আশ্রয়ণ এবং সুপেয় পানির অভাবে ভুগছে। তাদের মধ্যে শিশুরা বেশি ভুক্তভোগী। আরও এক দশক সহিংসতা চললে এই সংখ্যা আরও ১৫ লাখ ছাড়াবে।
কেবল উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়াতেই এক কোটি ৩১ লাখ মানুষ সহিংসতায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৮৭ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বোকো হারাম ২০১৬ সালে দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এদের এক ভাগ ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড লেভান্ত’র-আইএসআইএল (আইএসআইএস) সঙ্গে জোট বাঁধে। এই গোষ্ঠীই এখন বেশি ভয়ঙ্কর। সামরিক অভিযান চালমান থাকলেও তারা প্রতিবেশি ক্যামেরুন, চাদ ও নাইজারে হামলা ও সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে।
সময় জার্নাল/আরইউ