নিজস্ব প্রতিবেদক:
অষ্টম শ্রেণি পাস না করেও হওয়া যায় ডাক্তার। আর এজন্য খরচ করতে হয় ৭০ হাজার রুপি। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে এমনই এক গ্যাংয়ের খোঁজ মিলেছে। তারা অর্থের বিনিময়ে মেডিকেল ডিগ্রি প্রদান করত।
যার পুরোটাই ভুয়া। অভিযুক্তরা অর্থের বিনিময়ে বোর্ড অব ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের ডিগ্রি দিতো। তল্লাশি চালিয়ে শতাধিক আবেদনপত্র, ভুয়া সার্টিফিকেট ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৪ ভুয়া চিকিৎসককে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গুজরাটের সুরাটে ভুয়া মেডিকেল ডিগ্রির চক্রের খোঁজ মিলেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ডেটাবেসে ১২০০ ভুয়া ডিগ্রির হদিস মিলেছে। সেই তথ্যসূত্র ধরেই ১৪ জন ভুয়া চিকিৎসককেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সকলেই ওই গ্যাংয়ের কাছ থেকে ভুয়া ডিগ্রি কিনেছিল এবং সেই ডিগ্রি দেখিয়েই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছিল। গোটা ঘটনার মূল অভিযুক্ত ড. রমেশ গুজরাটিকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মূলত অর্থের বদলে বোর্ড অব ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের ডিগ্রি দিতো অভিযুক্তরা। তল্লাশি চালিয়ে শতাধিক আবেদনপত্র, ভুয়া সার্টিফিকেট ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু চিকিৎসক ভুয়া ডিগ্রি নিয়ে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করছেন বলে তাদের কাছে খবর আসে। পরে রাজস্ব বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ হানা দেয় শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে। সেখানেই ভুয়া এসব ডাক্তারদের হদিস মেলে।
বোর্ড অব ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের যে ডিগ্রি দিতো অভিযুক্তরা, আদতে গুজরাট সরকার এমন কোনও ডিগ্রিই দেয় না। অভিযুক্তরা ভুয়া ওয়েবসাইটে তাদের ডিগ্রির রেজিস্ট্রেশন দেখাত। মূল অভিযুক্ত মনগড়া এই বোর্ড তৈরি করে ভুয়া ডিগ্রি দিচ্ছিল অর্থের বিনিময়ে। ‘ইলেকট্রো-হোমিওপ্যাথি’র প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ৫ জন কর্মীও রাখা হয়েছিল। তিন বছরের কম সময়েই ডিগ্রি কোর্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যেত।
ভুয়া চিকিৎসকরাও আবার কম যান না। সাধারণ মানুষ ইলেকট্রো-হোমিওপ্যাথিতে বিশ্বাস করছেন না দেখে দাবি করেন, গুজরাটের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এই বোর্ড। ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে হোমিওপ্যাথি, অ্যালোপ্যাথি, আরোগ্য প্রাকটিস করতেন তারা।
এই ভুয়ো সার্টিফিকেট আবার বছর বছর রিনিউ করতে হতো। এর জন্য ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার রুপি চার্জ নেওয়া হত। যে ভুয়া চিকিৎসকরা এই টাকা দিতেন না, তাদের এই ডিগ্রি গ্যাং হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তানহা আজমী