নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণে আজিমপুর গার্লস স্কুল ও কলেজে স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
(৫ ডিসেম্বর) কলেজের মিলনায়তনে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের স্বরণে এ আয়োজন করা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ছালাহ্ উদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ নুরুজ্জামান। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক
সমন্বয়ক সারজিস আলম।
এসময় সারজিস আলম ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি জোর আহ্বান জানান।
মুখ্য আলোচক সারজিস আলম বলেন, আমাদের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে লেখাপড়া করে নিজেকে প্রস্তুত করা। এরপরের কাজ হচ্ছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের কাজ করা, দেশকে বাঁচানো।
প্রধান অতিথি মোঃ নুরুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার্থীরা যে পথ দেখিয়েছে তা আজ সকলের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি দেশের যে কোন সংকটে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
সভায় আন্দোলনে শহিদদের স্মরণ করা হয়। দেশের জন্য তাদের জীবন বিসর্জন জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে আখ্যা দেন বক্তাগণ। স্মরণ সভায় শহিদ খালিদ হাসান সাইফুল্লাহর পিতা জনাব কামরুল হাসান আন্দোলনে তার পুত্র নিহত হওয়ার হৃদয়বিদারক বর্ণণা দেন। ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের মানবিক বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় ১৮ই জুলাই ২০২৪ তারিখে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আশরেফা খাতুন ও নাফিসা ইসলাম সাকাফী এবং সহ-সমন্বয়ক মোঃ সুজন মিয়া আন্দোলনের সুফল ধরে রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
শুরুতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং জুলাই আন্দোলনের উপর একটি ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করা হয়। স্কুল শাখার শিক্ষক জনাব মোস্তফা ভূঁইয়া ভিডিও চিত্র নির্মাণ ও উপস্থাপন করেন।
সারজিস আলম তার বক্তব্যের শেষ দিকে বজ্র কন্ঠে আন্দোলনের শ্লোগানগুলো উচ্চারণ করেন সারজিস আলম, এতে শিক্ষার্থীরা ভীষণ উজ্জীবিত হয়ে ওঠে এবং শ্লোগানে কন্ঠ মেলায়। শ্লোগান গুলো ছিল এরকম- আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ, কোটা মেধা না মেধা মেধা, দিয়েছিতো রক্ত আরো দেবো রক্ত, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়, দিল্লি না ঢাকা ঢাকা ঢাকা, আপোষ না সংগ্ৰাম সংগ্ৰাম সংগ্ৰাম, দালালি না রাজপথ রাজপথ রাজপথ, ক্ষমতা না জনতা জনতা জনতা। এসব স্লোগান কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে এক অভূতপূর্ব শিহরণ জাগে। দীপ্ত কন্ঠের উচ্চারণের মধ্য দিয়ে দেশপ্রেম ও আপোষহীনতার জন্য তারা নতুন শপথ গ্ৰহণ করে।
এমন একজন তারকাকে কাছে পেয়ে তারা যারপরনাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে।
এমআই