সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগ এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ছয় জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রোববার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের সামনে মারামারিতে জড়ায় শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে বিভাগ দুটির মধ্যে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা শুরু হয়। খেলার শুরু থেকেই স্লেজিংকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। নির্দিষ্ট সময়ের খেলাতে উভয় পক্ষের ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় খেলা ট্রাইবেকারে গড়ায়। ট্রাইবেকারের সময় স্লেজিংকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় বিভাগের শিক্ষকরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। খেলা শেষে দুই পক্ষ তাদের নিজ নিজ বিভাগে ফিরে যায়।
পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের ঝাল চত্বরে পুনরায় উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসে ঝাল চত্বরে অবস্থান নেয়। এদিকে ফলিত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের বিভাগ থেকে বের হয়ে ফলিত বিজ্ঞান ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের সামনে মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ। এসময় উভয় পক্ষের হাতে লাঠিসোঁটা দেখা যায়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মারামারিতে ইইই বিভাগের ওমর ফারুক, নাজমুস সাকিব, মাহফুজ এবং ফলিত রসায়ন বিভাগের ইমন, আশিক, রাকিব আহত হন বলে জানা গেছে।
ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খেলার সময় মাঠে হাতাহাতির সময় ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের বিভাগের সভাপতির গায়ে ধাক্কা দেয়। বিষয়টি নিয়ে ঝাল চত্বরে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে স্যারের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানালে তারা উল্টো আমাদের সাথে বাজে আচরণ করে। পরে তারা বিভাগের অন্যদের খবর দিলে সবাই লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে আমাদের বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আঘাত করে জখম করে। বিষয়টি নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি, ফলিত রসায়ন বিভাগের জুনিয়র এক শিক্ষার্থী মাঠে ইইই বিভাগের সিনিয়রদের সামনে বাজে ভাবে স্লেজিং করতে থাকলে সিনিয়ররা প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে মাঠে দুই পক্ষের হাতাহাতিতে জড়ায়। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের ঝাল চত্বরে বসে থাকা অবস্থায় ইইই বিভাগের কয়েকজন জুনিয়রকে ফলিত রসায়ন বিভাগের কয়েকজন এসে বিভিন্ন হুমকি দেয়। তখন ইইই বিভাগের অন্যরা বিভাগ থেকে এসে হুমকি কেন দেওয়া হয়েছে এসব নিয়ে জিজ্ঞেস করলে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এছাড়া ফলিত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরীফ আল রেজা বলেন, খেলার মাঠের ঘটনা সেখানে শেষ হলেও পরে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁঠা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। যেহেতু সবাই আমাদেরই শিক্ষার্থী তাই আমাদের চাওয়া বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান হোক। সেই সঙ্গে এমন ঘটনা আর না ঘটুক এটাই প্রত্যাশা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইইই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, প্রক্টরিয়াল বডি উভয় পক্ষকে নিয়ে আলাদাভাবে বসেছিলো। বিষয়টির প্রাথমিক সমাধান হয়েছে। সোমবার আবার দুই পক্ষকে নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি বসবে।
এমআই