কাউছার আহমেদ, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বিশ্বমানের লাইব্রেরি ও শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি এবং বিভিন্ন সংকট-সমস্যা নিরসনে ১২ দফা দাবি জানিয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাঈল বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে উপাচার্য কার্যালয়ে দাবিগুলো উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।পরে নোবিপ্রবি উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক।
নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দেওয়া ১২ দফা দাবি সমূহ:
১) হল খোলা থাকা অবস্থায় এবং সরকারি ছুটির দিনে লাইব্রেরি বন্ধ থাকতে পারবে না।
২) লাইব্রেরিতে লাঞ্চ টাইমে দুপুর ১.০০-২.০০ টা পর্যন্ত অন্ততপক্ষে একজন স্টাফকে শিফট ভিত্তিক কাজ বণ্টন করার মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা প্রদান করতে হবে।
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাপ্তরিক কাজে যেমন : লাইব্রেরিতে, আইসিটি সেল, ল্যাবে, মেডিকেল সেন্টারে,পরিবহন পুলে, অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অফিস গুলোতে শিক্ষার্থীদের চুক্তিভিত্তিক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
৪) লাইব্রেরিতে নির্দিষ্ট গ্রুপ স্টাডি কর্ণার, "Research Help" নামে আলাদা হেল্প ডেস্ক, জিজ্ঞাসা ও অভিযোগ ডেস্ক এবং চার্জার কর্নার স্থাপন করতে হবে।
৫) ইউনিট ভিত্তিক Academic database (যেমন: Web of Science (Clarivate), CINAHL (EBSCOhost), IEEE Xplorer, Pub-med etc.) গঠন করা এবং এর অধিকতর সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থা করতে হবে। Scopus indexed journal এর free access নিশ্চিত করতে হবে।
৬) Institutional Email address দিয়ে প্রত্যেক ইউনিট ওয়াইজ অন্তত একটি একাডেমিক রিসার্চ ডাটাবেইজের ফ্রি এক্সেস নিশ্চিত করতে হবে।
৭) নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে ওয়াইফাই সংযোগের আওতাভুক্ত করে লাইব্রেরিকে এর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৮) সুগঠিত ওয়েবসাইট তৈরীর পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য রিমোট এক্সেস সেবা প্রদান করতে হবে।
·ওয়েবসাইটের পাশাপাশি নোবিপ্রবি লাইব্রেরির একটা অ্যাপ, ফেসবুক পেজ ও হেল্প লাইন নাম্বার স্থাপন করতে হবে।
·অ্যাপ, ওয়েবসাইট, ডাটাবেজ তৈরিতে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকে ও স্বচ্ছভাবে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
৯)লাইব্রেরিতে বায়োমেট্রিক সিস্টেম ও স্মার্ট কার্ড বা পাঞ্চ কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে ।
১০) হল থেকে লাইব্রেরির সমস্ত পথ আলোকিত ও সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাধীন করতে হবে।
১১) লাইব্রেরি ভবনে স্টেশনারি , প্রিন্টার ও ফটোকপি কর্ণার স্থাপন করতে হবে।
১২) সেন্ট্রাল লাইব্রেরিকে অত্যাধুনিক গ্রীন লাইব্রেরিতে পরিণত করার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি হয় জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার প্রাণকেন্দ্র। সুতরাং, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে লাইব্রেরিকে বিশ্বমানের করে তোলার বিকল্প নেই। তাই প্রযুক্তি এবং কাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে নোবিপ্রবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের পদচারণা বৃদ্ধি করা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকুরির সুযোগ তৈরি করে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের সময়েও লাইব্রেরি খোলা রাখা যেতে পারে। এছাড়া রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসবেও শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। মূলতঃ নোবিপ্রবিতে শিক্ষার পরিবেশ উন্নীতকরণের লক্ষ্যেই উক্ত দাবিগুলো পেশ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ইতিবাচক মনে করেন নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাঈল। তিনি জানান , এসব দাবিপূরণে সীমাবদ্ধতা হিসেবে তিনি অপ্রতুল বরাদ্দকে চিহ্নিত করেন। শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সংস্কার প্রয়োজন হলেও সবকিছু আমাদের পক্ষে প্রদান করা সম্ভব নয়। তবে লাইব্রেরী ভবনে স্টেশনারি, ফটোকপি এবং প্রিন্টের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস প্রদান করেন এবং ওয়াইফাই সংক্রান্ত সমস্যা পর্যালোচনা করে সমাধানের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তাছাড়া লাইব্রেরি আরও অধিক সময় খোলা রাখার ব্যাপারে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সময় জার্নাল/এলআর