রাবি প্রতিনিধি : পুলিশের কাছে মাদকচক্রের তথ্য দেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে মাদক কারবারিরা। এতে ঐ শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে তার পরিবারের সদস্যদের।
ভুক্তভোগী কাজী আশফিক রাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী। একই অভিযোগে তার ভাই তৌসফিক রাফিকেও হুমকি-ধামকি দিচ্ছে মাদক কারবারীরা। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের খালিশাপাড়া গ্রামে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কাজী আশফিক রাসেল জানান, তার গ্রাম জুয়া, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অপকর্মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি গ্রামের একটি কবরস্থানে কয়েকজনকে মাদক সেবন করতে দেখে তিনি নিষেধ করেন। এসময় মাদক কারবারীরা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এর কয়েকদিন পর গত রোববার (২০ জুন) গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই মাদক কারবারীদের একজন ও এক মোটরসাইকেল আরোহীকে দুই বোতল মদসহ আটক করেন। পরদিনও পুলিশ ফের অভিযান পরিচালনা করে। এরপর থেকে পুলিশকে তথ্য দেয়ার অভিযোগে মাদক কারবারীরা দুই শিক্ষার্থীকে প্রাণনাশ ও মিথ্যা মামলা দায়েরের হুমকিসহ নানাভাবে হয়রানি করছে।
কাজী আশফিক রাসেল বলেন, মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে আমি পুলিশের কাছে কোনো তথ্য বা অভিযোগ দেইনি। এর আগে কবরস্থান পবিত্র জায়গা হওয়ায় আমি সেখানে মাদক সেবনে নিষেধ করেছিলাম। তাদের মধ্যে একজনকে পুলিশ আটক করার পর থেকে আমি তথ্য দিয়েছি বলে দোষারোপ করে আমাকে হয়রানি করছে।
তিনি আরও বলেন, অপরাধী চক্র আমাকে এবং আমার ভাইকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি-ধামকি ও অশ্লীল গালিগালাজ করছে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে মিথ্যা মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এতে পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তা সংকটে আছেন। ভয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছি না।
ভুক্তভোগীর পিতা আব্দুল লতিফ বলেন, চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি আমরা। মাদক কারবারীরা আমার সন্তানদের প্রকাশ্যে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। গত সোমবার রাত্রে এক মাদক সন্ত্রাসীর বড় ভাই ফোনে আমার ছোট ছেলেকে অশ্লীল-অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মিথ্যা অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছে। মাদক কারবারি ও যেসব প্রভাবশালীদের ইন্ধনে তারা একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।
জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর-এ-আলম বলেন, মাদকের তথ্য আমরা অন্য সোর্স থেকে পেয়েছি। রাসেলকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আমরা জেনেছি। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিরিশিরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, হুমকি-ধামকির বিষয়টা আমি শুনেছি। তবে আমার একার পক্ষে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব না। এটা পুলিশ প্রশাসনের কাজ। তারা যদি ব্যবস্থা নেয়, আমি সহযোগিতা করব। এলাকার ছেলে হিসেবে আমার সাধ্যমত নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করবো।
সময় জার্নাল/এসএ