বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ ২ নেতাকে ‘সালাম’ দিয়ে ক্লান্ত জবি ছাত্রলীগ নেতারা!

শুক্রবার, জুন ২৫, ২০২১
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ ২ নেতাকে ‘সালাম’ দিয়ে ক্লান্ত জবি ছাত্রলীগ নেতারা!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ, হতাশা, অনিশ্চয়তা ও অনিদ্রায় দিন পার করছেন। নেতা হওয়ার জন্য দিন-রাত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার পেছনে ঘুরছেন প্রায় এক ডজন নেতা। প্রতিদিন কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে ‘সালাম’ দিয়ে তাদের দিনটা শুরু করা একটা রুটিন। তাদের কাছেই  এটাই এখন রাজনীতি। সালাম দিতে দিতে তারা আজ ক্লান্ত। দ্রুত কমিটি দিয়েই এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায় তারা। 

এদিকে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেই কোন কর্মসূচি। লকডাউনের শুরুতে ক্যাম্পাসে সক্রিয় থাকতে দেখা গেলেও এখন যায় না। এখন কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে টিএসসিতে হাজিরা দিয়ে নিজের সক্রিয়তা জানান দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পার্টি অফিস থেকে শুরু করে টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন কেন্দ্রীয় দুই নেতার পেছন পেছন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রতিনিয়ত তাদের প্রটোকল দিচ্ছেন। তবে কমিটির অনিশ্চয়তা কাটছেই না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের হতাশা-অনিশ্চয়তা প্রকাশ করে তাদের সীমাবদ্ধতা জানান দিচ্ছেন এসব নেতারা। তাদের এমন অবস্থা দেখে হতাশ হয়ে পড়েছেন কর্মীরাও। কর্মীরাও বিমুখ হচ্ছেন নেতাদের কাছ থেকে। তবে অনেক কর্মী বাধ্য হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রকাশ্যে। অনেকে ট্রলও করছেন।এমন নিস্ক্রিয়তার সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে মহরা দিচ্ছে। পুরান ঢাকায় বিভক্ত হয়ে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক শরীফ-সিরাজ কমিটি ৩ অক্টোবর ২০১২ সালে এক বছরের জন্য অনুমোদিত হলেও ৪ বছর কাটিয়ে দেয়। সর্বশেষ কমিটি ২০১৮ সালের ১৭ নভেম্বর  মো.তরিকুল ইসলামকে সভাপতি ও শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলকে সাধারন সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কমিটি গঠনের পর থেকেই বহিস্কারের হিরিক পরে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে বিরাগভাজন নেতা-কর্মীরদের বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বহিস্কার করেন। সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে ছাত্রলীগ থেকেই বহিস্কার করা হয়েছিল। এরই প্রেক্ষীতে আন্তঃকোন্দল বাড়তে থাকে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এরই ধারাবহিকতায় প্রেমঘটিত কারণে দিনভর সংঘর্ষের জেরে গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এই শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ২০১৯ সালের ২০ জুলাই সম্মেলন হলেও এখনও কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ । এমতাবস্থায় জবি ছাত্রলীগ নেতারা গণমাধ্যমের কাছে মুখও খুলতে নারাজ। শুধু হতাশা-দুর্দশা শেয়ার করেন। নিজেদের নাম প্রকাশ করতেও নারাজ তারা।

বয়সের তাড়নায় নুয়ে নেতা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে নেতাদের। অধিকাংশ পদ প্রত্যাশী নেতার বয়স ৩০ বছর পার হয়েছে। নেতাদের মধ্যে একজন বয়স প্রকাশ করলেও বাকীরা নিজেদের বিতর্কে জড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে কিছু বলেন না। তবে ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার আগে গঠণতন্ত্র অনুযায়ী বয়স ছিল।

পদ-পত্যাশি এক নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমাদের এই অবস্থার  দ্রুত সমাধান হলে আমরা হাফ ছেড়ে বাঁচি। ছাত্রলীগ ভালোবেসে অনেক তো ঘুরলাম, রাজনীতি করলাম। আর কত দিন ঘুরা যায় তাদের (কেন্দ্রীয় দুই নেতা) পেছনে? আমাদের তো ক্যারিয়ার আছে ? নেতা হলে রাজনীতি করবো , না হলে ব্যবসা বা চাকুরী করতে হবে , পাশাপাশি রাজনীতি করবো।

এই নেতা আরো বলেন, এখন করোনা ভাইরাসের কারণে বলতেছে ক্যাম্পাস খুললে কমিটি দিবে। তারা আবার কমিটি বিলুপ্ত করতেছে বিভিন্ন জায়গার। কিছুদিন আগে জেলা-মেডিকেল কলেজগুলোর কমিটি দিলো। আমাদের কমিটি দিতে বললেই বলে, ক্যাম্পাস খুললে দিবে। এটা কেমন কথা ? অন্য ইউনিটের কমিটি দিতে পারলে জগন্নাথের কমিটি দিতে সমস্যা কোথায়?

জবি ছাত্রলীগের এই অবস্থা নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, কমিটি দিতে না পারার দায় সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের। তারা কখনো যথা সময়ে কমিটি দিতে পারে না। পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতেও তাদের সময় লাগে। তাদের এই অবস্থার কারনে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের হতাশা বাড়ছে।

বিনএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ছাত্রলীগ করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি (শরিফ-সিরাজ কমিটি) ও বর্তমানে যুবলীগের সহ-সম্পাদক হিমেলুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনলে খুব খারাপ লাগে। জবি শাখা ছাত্রলীগ বরারের ন্যায় অবহেলিত ও বৈষম্যের শিকার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এই অবস্থার দায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপর বর্তায় উল্লেখ্য করে বলেন, জবি ছাত্রলীগকে মূল্যায়ন করে শক্তিশালী সংগঠন করা হোক। 

এবিষয়ে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলা যায়নি।

সময় জার্নাল/


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল