নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুততম সময়ে নির্বাচন আয়োজন এবং সংস্কারের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ জানতে চায়—অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকবে এবং কবে নির্বাচন হবে, এটা তাদের অধিকার।
তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা, কারণ এরকম পরিস্থিতিতে উপদেষ্টাদের অস্বস্তি দেখানো জনআকাঙ্খার বিরুদ্ধে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘মানুষের কাছে প্রশ্ন উঠতে পারে—সংস্কার আগে, না সংসার আগে? কারণ এখন প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে, বাজারে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনগণ দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘সর্বোপরি, সংস্কার আগে যদি সংসারের সমস্যা না সমাধান করা হয়, তবে তা জনগণের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠবে। তাই সংস্কারের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ থাকলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। যদি কেউ স্বৈরাচারী হতে চায়, তবে তার সামনে কোনো বিধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।’ তিনি রাষ্ট্রকে ফ্যাসিস্টমুক্ত রাখতে জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। তার মতে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে দেশের গণতন্ত্রও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের রোডম্যাপ বা কাজের হিসাব জানতে চাইলে তাদের মধ্যে অস্বস্তি দেখা যায়—এটি দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীত। এমন পরিস্থিতি দেশের জন্য বড় চিন্তার বিষয়। জনগণকে নির্বাচনমুখী করার জন্য সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা মনে করুন, সরকার নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না। একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্যই বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি। আমাদের কাজ জনগণের কল্যাণে, জনগণের জন্য।’
তিনি দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনী যাত্রায় জনগণই আমাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী। তাই আমাদের জনগণের পাশে থাকতে হবে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি হলো এক সঠিক দিশা, যা দেশের সকল বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবে। আমাদের কাজ মানুষের জীবনে উন্নয়ন আনা এবং একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।’
তারেক রহমান শেষ দিকে বলেন, ‘সরকারের উচিত জনগণের কল্যাণে কাজ করা, শুধু নিজেদের আত্মপ্রশংসা না করে। জনগণের সমস্যার প্রতি আন্তরিক দৃষ্টি দেওয়া, এবং তাদের কষ্ট লাঘব করা। আমরা আশা করি সরকার দ্রুততম সময়ে নির্বাচন আয়োজন করবে এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ যতদিন সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে প্রত্যাশা করবে, ততদিন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
এই বক্তব্যের মাধ্যমে, তারেক রহমান সরকারকে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এবং জনগণের আশা পূরণের লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এমআই